নাটকীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৫ রানে হারালো অস্ট্রেলিয়া

তীরে এসে তরী ডুবলো নিউজিল্যান্ডের। ৩৮৯ রানের টার্গেটে শেষ পর্যন্ত ৩৮৩ রানেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কিউইদের। জয়ের জন্য মিচেল স্টার্কের করা ৫০তম ওভারটিতে ১৯ রান দরকার ছিলো গত আসরের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু জিমি নিশামের রান আউটের কারণে ১৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি টম লাথাম বাহিনী।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা হয় দানবীয়। ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেডের মারকাটারি ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ৩৮৮ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ধীরগতির শুরু হলেও রাচীন রবীন্দ্রর ১১৬, ড্যারিল মিচেলের ৫৪ ও নিশামের ৫৮ রানের পরও ৩৮৩ রানে থামে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।

সব মিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপে আরও একটি জমজমাট ম্যাচ দেখলেন ভক্তরা। শুক্রবার চেন্নাইয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের নাটকীয় ম্যাচের পর আজ ধর্মশালার এই ম্যাচটি হতে পারে এবারের আসরের অন্যতম সেরা ম্যাচ।

অস্ট্রেলিয়া শুরুতে যে ব্যাটিং ঝড় তুলেছিল শেষ পর্যন্ত সেই ধরাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। ফলে ২৩ ওভারে ২০০ রান করা অস্ট্রেলিয়া ৩৮৮ রান করেছে। ৪৯.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে তাদের এই সংগ্রহ।

ধর্মশালায় সকালে টস জিতে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম লাথাম অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু তার সিদ্ধান্ত যে এমন ভয়ঙ্কর হয়ে দেখা দেবে তা হয়তো ভাবতেই পারেননি। একদিকে ডেভিড ওয়ার্নার অন্য প্রান্তে ট্রাভিস হেড।

অস্ট্রেলিয়ার এই দুই ওপেনার এমনই বিধ্বংসী ব্যাটিং শুরু করেন যে, বোলারদের নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা হয়েছিল। গ্যালারির দর্শকরা কম আতঙ্কে ভোগেননি। দর্শকের আতঙ্কের কারণ ওয়ার্নার এবং ট্রাভিস হেড যেভাবে বলকে বাতাসে ভাসিয়ে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলছিলেন তাতে আহত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

দুই ওপেনার এতটাই বিধ্বংসী ছিলেন যে মাত্র ৮.৫ ওভারে দলীয় স্কোর ১০০ তে নিয়ে যান। আর ২৩ ওভারে পৌঁছান দুইশতে। এর আগে অবশ্য বিশতম ওভারের প্রথম বলে উদ্বোধনী জুটিতে ভাঙ্গন ধরে। বোলার গ্লেন ফ্লিপসের বলে তার হাতে ক্যাচ দেন ওয়ার্নার। ৬৫ বলে ৮১ রান করেন তিনি। পাঁচটি বাউন্ডারির পাশাপাশি ছয়টি ওভার বাউন্ডারি ছিল তার ইনিংসে।

অন্যপ্রান্তে থাকা হেড করেছেন ১০৯ রান। ৬৭ বলের ইনিংসে দশটি বাউন্ডারি মেরেছেন। তার ইনিংসে ওভার বাউন্ডারি সাতটি। প্রথম জুটিতে তাদের সংগ্রহ ছিল ১৭৫ রান। ১৯ ওভারে এসেছিল এই রান।

অস্ট্রেলিয়ার পরের ব্যাটাররা অবশ্য এতটা বিধ্বংসী হতে পারেননি। বড় জুটিও তেমন একটা গড়ে ওঠেনি। তবে পঞ্চম উইকেটে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও জস ইংলিশের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ভালো একটা জুটির দেখা পায়।  ম্যাক্সওয়েল ২৪ বলে ৪১ রান করেন। পাঁচটি বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ইনিংস।

ইংলিশ ২৮ বলে করেছিলেন ৩৮ রান। তবে ছোট্ট কিন্তু ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ১৪ বলে তিনি ৩৭ রান করতে দলের সংগ্রহ চারশ’র কাছাকাছি নিয়ে যেতে সহায়তা করেন। তার এই ঝড়ো ইনিংসে দুই বাউন্ডারি ও চারটি ওভার বাউন্ডারি ছিল।

অস্ট্রেলিয়ার এমন ঝড়ো ব্যাটিংয়ের মাঝেও গ্লেন ফ্লিপস দারুণ বোলিং করেছেন। ১০ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে তিনি তিন উইকেট শিকার করেন। সম সংখ্যক উইকেট নিতে ট্রেন্ট বুল্টের খরচ হয়েছে ৭৭ রান।

Exit mobile version