রান তাড়ায় ভীত দক্ষিণ আফ্রিকা অবশেষে সহজ জয়ই পেয়েছে। সেমিফাইনালের আগে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়েছে ৫ উইকেটে। প্রথমে ব্যাট করে ২৪৪ রানে অলআউট হয় আফগানরা। জবাবে ৪৭ ওভার ৩ বলে ৫ উইকেটে ২৪৭ রান করে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। নয় ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে প্রোটিয়ারা।
আহমেদাবাদে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে একটা সময় বিপদে পড়ে আফগানিস্তান। ৪ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারায় তারা। বিনা উইকেটে ৪১ থেকে ৩ উইকেটে ৪৫ হয়ে যায় আফগানিস্তান। অথচ শুরুটা ভালোই ছিল তাদের। উদ্বোধনী জুটিতে ৪১ রান যোগ করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। আর ৪১ রানেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটার আউট হয়েছেন। অধিনায়ক হাসমত উল্লাহ শহীদি মাত্র সাত বল টিকেছেন।
এই বিপদ সামাল দিয়েছেন রহমত শাহ ও আজমত উল্লাহ ওমরজাই। তাদের জুটিতে যোগ হয় ৪৯ রান। ২৬ রান করে আউট হয়েছে রহমত শাহ। এরপর আফগানিস্তান দ্রুত দুই উইকেট হারালেও অবিচল ছিল আজমউল্লার ব্যাট।
১১৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে দু’শো রানের আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল আফগানিস্তানের। কিন্তু তা হতে দেননি আজমত উল্লাহ। হাফ সেঞ্চুরি করে সেঞ্চুরির পথেই হাঁটছিলেন তিনি। তবে দুর্ভাগ্য তার। মাত্র তিন রানের জন্য তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারে পৌছাতে পারেন নি।
আজমত উল্লাহ অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত। কিন্তু আফগানিস্তানের ইনিংসের কোন বল বাকি ছিল না। ছিল না কোন উইকেটেও। ১০৭ বল খেলে ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন আজমত উল্লাহ। আর ৫০ ওভার খেলে ২৪৪ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
দক্ষিণ আফ্রিকার জেরাল্ড কোয়েতজি ৪৪ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। মূলত এই ব্যাটিং পারফরম্যান্সে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালের রেস থেকে ছিটকে পরে আফগানিস্তান। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালেও নিউজিল্যান্ডের সুপার রান রেট টপকানো সম্ভব ছিল না তাদের জন্য।
এবারের বিশ্বকাপে রান তাড়ায় রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দক্ষিণ আফ্রিকা যে দুটি ম্যাচ হেরেছে দুটিতেই পরে ব্যাট করেছে। নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩৮ রানে ও ভারতের কাছে ২৪৩ রানে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তানের বিপক্ষে পরে ব্যাট করে কোন মতে সেই ম্যাচ জিতেছে ১ উইকেটে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৪৫ রানের টার্গেটে দ্রুত রান তুললেও খুব কাছাকাছি ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬৪ রানে প্রথম উইকেটের পর ৬৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। দুই উদ্বোধনী ব্যাটারই আউট হয়ে যান। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ২৩ রানে ও কুইন্টন ডি কক ৪১ রান করেন।
১০০ রানের মধ্যে আর কোন উইকেট পড়েনি দক্ষিণ আফ্রিকার। রান তাড়া করতে গিয়ে তাদের হার্ড হিটার ব্যাটাররাও যেন দুর্বল হয়ে পড়েন। হ্যানরিক ক্লাসেন ১৩ বলে ১০ রান ও ডেভিড মিলার ৩৩ বলে ২৪ রান করেন।
তবে একপ্রান্ত আগলে রাখেন ফন ডার ডুসেন। তাকে শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দিয়েছেন অ্যান্ডিল ফেহলাকওয়াইও। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৫ রান যোগ করেন তারা। ডুসেন ৭৬ ও ফেহলাকওয়াইও ৩৯ রানে অপরাজিত থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত করেন। ১৫ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় পায় প্রোটিয়ারা।