বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের উড়িয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত শুরু নিউজিল্যান্ডের

ইংলিশ বোলারদের তুলোধোনা করে ইংল্যান্ডের ২৮৩ রানের টার্গেটকে মামুলি বানিয়ে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ জিতেছে ৮২  বল হাতে রেখে। ৯ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে উইল ইয়ংকে আউট করলেও বাকিটা সময় চরম হতাশায় কেটেছে ইংলিশ বোলারদের। 

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে চার ছক্কার বৃষ্টি ঝরিয়েছেন ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবিন্দ্র। এতটাই আগ্রাসী ব্যাটিং করেছে এই দু’জন মনে হয়েছে ওয়ানডে নয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হচ্ছে। 

ইংল্যান্ডের ২৮৩ রানের টার্গেট ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১০ রানে উইল ইয়ংয়ের উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কোন রান না করেই আউট হয়েছেন উইল ইয়ং। এরপর ইংলিশ বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাট করতে থাকেন ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবিন্দ্র। এই দুই ব্যাটসম্যানের সামনে অসহায় ছিলেন ইংলিশ বোলাররা। বাউন্ডারির বাইরে বল সংগ্রহ করতে ব্যস্ত ছিলেন ইংল্যান্ডের ফিল্ডাররা। এই জুটি ভাঙার কোন উপায় খুঁজে পায়নি ইংল্যান্ড।

ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবিন্দ্র দু’জনই সেঞ্চুরি করেছেন। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি করেন ডেভন কনওয়ে। ৮৩ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কোন ব্যাটারের দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। অল্প সময় পর নিউজিল্যান্ডের হয়ে এই রেকর্ড আবার নতুন করে লিখেছেন রাচিন রবিন্দ্র। ৮২ বলে তিন অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছেন তিনি। ২২ ইনিংসে পঞ্চম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ডেভন কনওয়ে। এ বছর এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। আর নিউজিল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করলেন রাচিন রবিন্দ্র। ২৩ বছর বয়সে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তিনি। 

৩৬ ওভার ২ বলে ১ উইকেটে ২৮৩ রান করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়ে ১৫২ ও রাচিন রবিন্দ্র ১২৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ১২১ বলে ১৫২ রান করেন ডেভন কনওয়ে। আর ৯৬ বলে ১২৩ রান করেন রাচিন রবিন্দ্র। ২১১ বলে ২৭৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তারা।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। জনি বেয়ারেস্ট ও ডেভিড মালানের উদ্বোধনী জুটিতে ৪০ রান আসলেও শুরুর দিকে চাপে পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ১১৮ রানের ৪ উইকেট হারায় ইংলিশরা। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান ১৪ ও জনি বেয়ারেস্ট ৩৩ রান করেন। হ্যারি ব্রুক মারমুখী মেজাজে থাকলেও ১৬ বলে ২৫ রান করে ফিরে গেছেন। এরপর মঈন আলী আউট হয়েছেন ১১ রান করে।

ওয়ানডাউনে নামা জো রুটকে নিয়ে ইনিংস এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নেন অধিনায়ক জস বাটলার। তবে বাটলার ৪৩ রানে আউট হলে ৭০ রানে ভাঙ্গে এই জুটি। অন্যদিকে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং করছিলেন জো রুট। ১৩ তম বিশ্বকাপে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন তিনি। বাটলার ও রুট জুটি ভাঙ্গার পর আর বড় কোন জুটি হয়নি ইংল্যান্ডের। বিশ রানে আউট হয়েছেন লিয়াম লিভিংস্টোন। 

সেঞ্চুরির আশা জাগালে ও রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে গ্লেন ফিলিপসের বলে বোল্ড হয়েছেন জো রুট। ৮৬ বলে ৭৭ রান করেছেন তিনি। তার বিদায়ে বড় ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। এরপর ছোট ছোট ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮২ রান করে ইংল্যান্ড। ক্রিস ওকস ১১ ও স্যাম কারান ১৪ রানে আউট হয়েছেন। আদিল রশিদ ১৫ ও মার্ক উড ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ উইকেট জুটিতে রশিদ ও উড ২৬ বলে ৩০ রান করেছেন। নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে সফল বোলার ম্যাট হেনরি । ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল সান্তনার।

Exit mobile version