৫ নভেম্বর পর্যন্ত একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ শতকের রেকর্ডটা ছিলো শচীন টেন্ডুলকারের দখলে। বিশ্বকাপের ১৩ তম আসরে সেদিন পর্যন্ত খেলা সাত ম্যাচের সাতটায় জিতে সেমিফাইনাল আগেই নিশ্চিত করে রেখেছিলো স্বাগতিকরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নামাটা ছিলো ভারতীয় ক্রিকেটারদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের উপলক্ষ্য মাত্র। তবে সেদিন ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখটা ছিলো আরো দারুণ কিছুর উপর।
ওয়ানডেতে শচীনের রেকর্ড ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন ৫ নভেম্বর ৩৬ এ পা দেয়া বিরাট কোহলি। নিজের ৩৫তম জন্মদিন উদযাপন করার জন্য এরচেয়ে ভাল কোন উপায় হয়ত পেতেন না কোহলি।
ইডেনের ভরা গ্যালারির সামনে নিজের শৈশবের আইডল শচীন টেন্ডুলকারের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে করেছেন সেঞ্চুরি। দলও জিতেছে, নিজেও হয়েছেন ম্যাচসেরা। জন্মদিনটা সত্যিকার অর্থেই বিশেষভাবে রাঙিয়ে রেখেছেন ভারতের এই ব্যাটিং জিনিয়াস।
একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ডটা এখন আর শচীনের একার নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শতক হাঁকিয়ে তাতে ভাগ বসিয়েছেন ভারতের তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। তবে সেই রেকর্ডটা একান্তই নিজের করে নেয়ার সুযোগ থাকছে বিরাটের কাছে।
রবিবারের ম্যাচে বেঙ্গালুরুতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেই মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে যাবেন কোহলি। সেদিন সাবেক ভারতীয় অধিনায়কের উপর কোটি ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখ থাকবে আরো একবার। যদি সেদিন ডাচদের বিপক্ষে কোহলি সেঞ্চুরির দেখা নাও পান তারপরেও এই বিশ্বকাপেই অন্তত আরো একটি সুযোগ পাবেন ক্রিকেটের বরপুত্র।
সেটি আসবে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম সেমিফাইনালে। ফাইনালে উঠতে পারলে কোহলিরা তাঁদের প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবেন দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা অস্ট্রেলিয়াকে। সেদিন আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচেও এই অনন্য রেকর্ডটি গড়ার সুযোগ পাবেন কিং কোহলি।
একদিনের ক্রিকেটে কোহলির ৪৯ সেঞ্চুরির চারটাই এসেছে বিশ্বকাপের মঞ্চে। এরমধ্যে দুটোই আবার চলতি আসরে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের মঞ্চে কোহলির প্রথম সেঞ্চুরিটা এসেছিলো মিরপুরে, বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১১ বিশ্বকাপে সেদিন একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপ অভিষেক ম্যাচেই শতক হাকিয়েছিলেন তিনি।
কোহলি একদিনের বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা করেন পরের আসরেই। চারবছর পর এডেলেইডে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে শতকের দেখা পান তিনি।
তৃতীয় সেঞ্চুরির জন্য কোহলিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ আট বছর। তবে চতুর্থটার জন্য তাঁকে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। চলতি বিশ্বকাপে ৩৫ বছর বয়সী কোহলি তিন সংখ্যার ম্যাজিকাল ফিগারে পৌছেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে। পুনেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনি ছিলেন অপরাজিত।
একম্যাচ বাদে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ইডেনে এক দিনের ক্রিকেটে নিজের ৪৯তম সেঞ্চুরি করেছেন কোহলি। এই ইনিংসের পর ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডে শচীনের পাশেই চলে এসেছেন বিরাট।
৪৯টি সেঞ্চুরি করতে শচীন খেলেছিলেন ৪৫২টি ইনিংস। তবে বিরাট ২৭৭টি ইনিংসে সেই রেকর্ড ছুঁয়েছেন। আর একটি শতরান করলেই শচীনকে টপকে এককভাবে শীর্ষে পৌঁছে যাবেন বিরাট। ভারতীয় এই ব্যাটার বিশ্বকাপে আগামী তিন ম্যাচে শচীনের ঐতিহাসিক রেকর্ডটি ভাঙতে পারেন কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।