১৩৭ রানে ইংল্যান্ডের কাছে হারলো বাংলাদেশ

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ধারাটা ধরে রাখতে পারলো না বাংলাদেশ। দুই দলের সর্বশেষ দেখায় ৫০ রানে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বকাপে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা যেন নির্দয়ভাবে সে হারের প্রতিশোধ নিলো। আজ ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে জস বাটলারের ইংল্যান্ড ১৩৭ রানে বাংলাদেশকে হারিয়েছে।

প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে ৩৬৪ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করিয়েছিল। জবাবে বাংলাদেশ ২২৭ রানে অল আউট হয়। এর ফলে বিশ্বকাপে দুই ম্যাচ শেষে প্রথম জয়ের মুখ দেখলো ইংল্যান্ড। অন্যদিকে দুই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম হার। ইংল্যান্ড প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল।

মূলত, ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হওয়ার আগেই এ ম্যাচের ফল চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তারপরও অতি আশাবাদীদের আশাহত হতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। বাংলাদেশ ইনিংসের ১০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই বড় ব্যবধানে হার নিশ্চিত হয়ে যায়। কেননা স্কোরবোর্ড তখন ৪৯ রান জমা হলেও ফিরে গেছেন চার ব্যাটার। তানজীদ হাসান (১), নাজমুল হোসেন শান্ত (০), সাকিব আল হাসান (১) আর মেহেদি হাসান মিরাজ (৮)। এই চার ব্যাটারের প্রথম তিনজনকে ফেরত পাঠান রিস টপলি।

সতীর্থদের আশা যাওয়ার মাঝে একপ্রান্তে অবিচল ছিলেন ওপেনার লিটন দাস। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে বড় একটা জুটি গড়েছেন তিনি। ৭২ রানের জুটি তাদের। শেষ পর্যন্ত ৭৬ রান করেন তিনি। মুশফিকুরের সংগ্রহ ছিল ৫১ রান। এছাড়া উল্লেখযোগ্য রান করেছেন তাওহীদ হৃদয় (৩৯)।

বাংলাদেশের মূল সর্বনাশ করা রিস টপলি শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ক্রিস ওকসের শিকার ছিল ২ উইকেট।

সকালে, টস জয়ের পর বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাট হাতে ইংলিশ ব্যাটাররা যে এতটা ভয়ঙ্কর হবে তা হয়তো তিনি অনুমান করতে পারেননি। বোলাররা তার আস্থার জবাব দিতে পারবে কিনা তাও বুঝতে পারেননি। তবে ইংলিশ ব্যাটাররা ঠিকই ঝড়ের বেগে রান তোলার প্রতিজ্ঞা নিয়েই ক্রিজে নেমেছিলেন। শুরু থেকে ব্যাটাররা ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ায় ইংল্যান্ডের রান বেড়েছে ঝড়ের গতিতে।

দুই ওপেনার জনি বোয়ারস্টো এবং ডেভিড মালান নির্দয় ব্যাটিং করেছেন। তারা যেন নিজেদের মধ্যে একে অপরকে টপকে যাবার লড়াইয়ে করেছেন। তাইতো স্কোরারদেরকে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে। বিশ্বকাপে তো বটেই ক্যারিয়ার সেরাটা ইনিংসটা খেলেছেন মালান এই বাংলাদেশের বিপক্ষে। ১৪০ রান করেছেন তিনি। এর আগে তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ১৩৪ রানের।

বেয়ারস্টো ও মালান প্রথম উইকেট জুটিতে যা করেছেন তা বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ঠ হতাশার। ১১৫ রানের জুটি তাদের। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মাহেদি হাসানের ব্যর্থতার পর সাকিব আল হাসান নিজেই এ জুটিতে ভাঙ্গন ধরান। তার বলে বোল্ড হন বেয়ারস্টো। ৫৯ বলে ৫২ রান করেন তিনি। আট বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ইনিংসটা।

দ্বিতীয় উইকেটে মালান ও জো রুটও বাংলাদেশের বোলারদের স্বস্তি দেয়নি। ১৫১ রানের পার্টনারশিপ তাদের। মাহেদি হাসান এ জুটি ভাঙ্গেন। আউট হন মালান। ১০৭ বলে ১৪০ রান করেন তিনি। এটা তার ষষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ১৬টি বাউন্ডারির পাশাপাশি পাঁচটি ওভার বাউন্ডারি তার ইনিংসের শোভা বাড়িয়েছে। অন্যদিকে জো রুট করেন ৮২ রান। ৬৮ বলে তার ইনিংসে আটটি বাউন্ডারির পাশাপাশি একটি ওভার বাউন্ডারি ছিল।

মূলত ইংল্যান্ডের ইনিংসটা এই তিন ব্যাটারের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। অন্যদের সংগ্রহ তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। তারা এসেছেন আর ফিরেছেন। আর তাই একটা সময় ইংল্যান্ডের চারশ ছাড়িয়ে যাওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ তা থেকে রেহাই পেয়েছে।

মাহেদি হাসান ছিলেন বাংলাদেশের সফল বোলার। চার উইকেট নিয়েছেন তিনি। আর তিন উইকেট শিকার ছিল শরিফুল ইসলামের। এছাড়া তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান একটি করে উইকেট পেয়েছেন।

Exit mobile version