ডেভিড মিলার ও সৌম্য সরকার উভয়েই ২২ রান করেছেন ১৮ বল খেলে। মজার ব্যাপার হলো উভয়েই দুটি করে বাউন্ডারের বিপরীতে একটি করে ছক্কা হাকিয়েছেন। পার্থক্য শুধু সৌম্য আউট হয়েছেন আর মিলার অপরাজিত থেকে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।
টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেয়া ফরচুন বরিশাল বোলারদের কল্যাণে ম্যাচটা আগেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত দুই উইকেট হারালেও কোন ধরনের যদি কিন্তুর সুযোগ দেননি অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। অপরাজিত ৪৭ রান করেছেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক অলরাউন্ডার।
১৫০ রানের টার্গেট ৯ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই টপকে গেছে ফরচুন বরিশাল। দ্বিতীয় দল হিসেবে উঠে গেঠে এবারের আসরের ফাইনালে।
আগামী শুক্রবার ১ মার্চের ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে তামিম-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহদের ফরচুন বরিশাল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রংপুর তাদের টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর শামিম পাটওয়ারির ২৪ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের সুবাদে ৭ উইকেটে ১৪৯ রানের স্বল্প রানের পুঁজি পায়। যা অনেকটা হেসে খেলেই যা টপকে যায় বরিশালের ব্যাটাররা।
রংপুর রাইডার্স তাদের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাইফুদ্দিনের বোলিং তোপে দুই উইকেট হারায়। ওপেনার মেহেদি হাসানকে নিজের প্রথম বলেই আউট করার পর ওভারের ষষ্ঠ বলে এই আসরের ‘ডেঞ্জারম্যান’ সাকিবের উইকেট তুলে নেন সাইফুদ্দিন। ইনিংসের ৫ম ওভারে আরেক ওপেনার রনি তালকুদার আউট হলে দলীয় ১৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রংপুর।
দলীয় ৪৮ রানে নিকোলাস পুরান ও জেমস নিশাম পর পর দুই বলে আউট হলে রীতিমতো ধুকতে থাকে রংপুর। অথচ টানা ৯ ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ থেকে প্লে-অফে আসে রংপুর রাইডার্স।
১৫তম ওভারের ৫ম বলে দলীয় ৭৭ রানে রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ৭ম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার সময় দলটার সর্বোচ্চ সংগ্রহ কতো দাঁড়াতে পারে এমন একটা প্রশ্ন নিশ্চয়ই দর্শকদের মনে উকি দিয়েছে। সেই দলটাই কিনা ফরচুন বরিশালকে শেষ পর্যন্ত দেশড় রানের টার্গেট দিয়েছে।
মূলত নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফেরা এক সময়ের মারকুটে ব্যাটার শামিম হোসেন পাটয়ারির ২৪ বলো করা ঝড়ো অপরাজিত ৫৯ রানের ওপর ভর করে দলীয় এই রান তুলতে পেরেছে রংপুর।
দলটার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রান এসেছে কিউই ব্যাটার জেমস নিশামের ব্যাটে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪ রান এসেছে অধিনায়ক নুরুল হাসানের ব্যাটে। ১২ রান করে করেছেন মোহাম্মদ নবী ও আবু হায়দার রনি। রনি অবশ্য শামিম পাটওয়ারির সাথে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন।
শামীম পাটওয়ারি বেশি তান্ডবটা চালিয়েছেন ক্যারিবীয় মিডিয়াম পেসার ওবেদ ম্যাককয়ের করা ১৯তম ওভারটিতে। দুই বাউন্ডারির বিপরীতে শামীম ছক্কা হাকিয়েছেন তিনটি। নিয়েছেন ২৬ রান।
বরিশালের পক্ষে ইংলিশ পেসার জেমস ফুলার সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন। বোলিংয়ে শুরুর ঝড়টা তুলে ২ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন ক্যারিবীয় পেসার কাইল মায়ার্স ও স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
জবাবে খেলতে নেমে বরিশালও শুরুতে চাপে পড়েছিলো। আবু হায়দার রনির করা চতুর্থ ওভারে বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ও মেহেদি মিরাজ আউট হলে চাপে পড়ে বরিশাল।
চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে খেলতে নামা মুশফিকুর রহিম প্রথমে সৌম্য সরকার পরে একে এক কাইল মায়ার্স ও ডেভিড মিলারের সাথে ছোট ছোট পার্টনারশিপ গড়ে অপরাজিত ৪৭ রানে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। বরিশালের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ বলে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন কাইল মায়ার্স।
ডেভিড মিলার ও সৌম্য সরকার উভয়েই ২২ রান করেছেন ১৮ বল খেলে। মজার ব্যাপার হলো উভয়েই দুটি করে বাউন্ডারের বিপরীতে একটি করে ছক্কা হাকিয়েছেন। পার্থক্য শুধু সৌম্য আউট হয়েছেন আর মিলার অপরাজিত থেকে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।