চলে গেলেন ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ী খেলোয়াড় ও কোচ মারিও জাগালো। শনিবার জাগালোর অফিসিয়াল ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে জাগালো চারবার বিশ্বকাপ জয় করেছেন। ১৯৫৮ সালে বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল দলে উইঙ্গার হিসেবে খেলেছিলেন জাগালো। ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলেরও খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলে দলের কোচ ছিলেন জাগালো। সে সময়ে তার অধীনে থাকা দলটির সদস্য ছিলেন পেলে, জর্জিনহো, রিভেলিনো এবং টোস্টাওয়ের মত তারকা খেলোয়াড়রা। অনেকের মতে এটাই ছিল সর্বকালের সেরা দল।
তারা ব্রাজিল দলকে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ জয়ের মাঝ দিয়ে জাগালো প্রথম একটা কীর্তি গড়েছিলেন। খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের প্রথম কীর্তি তার।
জাগালো ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলে দলের কোচ ছিলেন। তবে এবার মূল কোচ নন, কার্লোস আলবার্তো পেরেইরার সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৩১ সালে ৯ আগষ্ট জম্ম মারিও জাগালোর। তার ডাক নাম ছিল ওল্ড ওলফ। প্রথম জম্মবার্ষিকীর আগেই জাগালোর পরিবার রিও ডি জেনিরোতে চলে আসে। সেখানেই ফুটবলের প্রতি জাগালোর ভালোবাসা তৈরি হয়। তবে তার প্রথম ভালোবাসা ছিল বিমানের প্রতি। বিমানের পাইলট হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু চোখের দৃষ্টি সঠিক না হওয়ায় সে ইচ্ছার জলাঞ্জলি দিতে হয়েছিল জাগালোকে।
পড়াশোনার প্রতি ছিল তার দারুণ আগ্রহ। হিসাববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা জাগালো সময় পেলেই ফুটবল নিয়ে মেতে উঠতেন। এক সময় স্থানীয় নামী ক্লাব আমেরিকাতে নাম লেখান তিনি। তবে তার পরিবার মোটেও ফুটবল পছন্দ করতো না।
এক সাক্ষাতকারে জাগালো বলেছিলেন, আমি ফুটবলার হই তা কখনো আমার পরিবার চায়নি। তারা আমাকে ফুটবল খেলতে দিতে চাইত না। তাছাড়া এটা কোনো সম্মানজনক পেশাও ছিল না। সমাজ ফুটবলারদের সেভাবে সম্মানও করতো না। সে কারণে আমি বলে থাকি দুর্ঘটনাক্রমে ফুটবল আমার জীবনে জায়গা করে নিয়েছিল।’
ফুটবল মাঠে জাগালোর শুরুটা ছিল লেফট মিডফিল্ডার হিসেবে। তার জার্সি নম্বর ছিল ১০। পেলের আগে তিনি এটা ব্যবহার করতেন। তাছাড়া ১০ নম্বর জার্সির তখন এতটা তাৎপর্যও ছিল না। ১৯৫৮ সালে তিনি প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন। সুইডেনে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে পেলে ও গারিঞ্চার পাশাপাশি ছয় ম্যাচের সব ম্যাচেই প্রথম একাদশে ছিলেন। সে সম্পর্কে জাগালো জানিয়েছিলেন, পেলের বয়স তখন ১৭, আমার ২৭। সে কারণে আমি বলে থাকি আমি কখনো পেলের সঙ্গে খেলিনি, পেলে আমার সঙ্গে খেলেছে।
১৯৫৫ সালে জাগালো বিয়ে করেন। স্ত্রীর নাম ছিল আলসিনা ডি কাস্ত্রো। ২০১২ সালে তার স্ত্রী মারা যান। তাদের চারটি সন্তান রয়েছে।