নতুন মৌসুমকে সামনে রেখেই বিপিএল নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। বিপিএল শুরুর আগেই যেন সংকটের মুখে পরে যাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ম্যাচ মাঠে গড়ানোর আগেই যে বাস্তবতা সামনে এসেছে, তাতে এবারের আসর নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তারা।
মাত্র তিন মাস আগে টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে বিসিবি। ফলে দল গঠনের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর হাতে সময় দুই মাসেরও কম। এই তড়িঘড়ি সূচির সবচেয়ে বড় ধাক্কা পড়ছে বিদেশি ক্রিকেটার নির্বাচনে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দাবি, এত অল্প সময়ে আন্তর্জাতিক তারকাদের সঙ্গে চুক্তি করা প্রায় অসম্ভব। এর ফল হিসেবে আবারও বিপিএলে মানহীন বিদেশি ক্রিকেটারের সমাগমের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পরিস্থিতি আরও জটিল। কারণ বিপিএলের সময়সূচির সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ হচ্ছে বিশ্বের দুটি বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের। একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় চলবে বিগ ব্যাশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় এসএ টি-টোয়েন্টি। এই দুই লিগে বিশ্বের বেশির ভাগ শীর্ষ ক্রিকেটার আগেই চুক্তিবদ্ধ। ফলে বিপিএলের জন্য তাদের পাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ না হওয়ায় শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের পাওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছিল।

পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাও বিপিএলের নিয়মিত অংশ। এবারও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নজর ছিল মূলত এই দুই দেশের দিকেই। কিন্তু সেই পরিকল্পনাতেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে হঠাৎ করে ঠিক হওয়া শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
২৬ ডিসেম্বর সিলেটে বিপিএল শুরু হলেও ৭ জানুয়ারি ডাম্বুলায় শুরু হবে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা সিরিজ। দুই বোর্ডই নিজ নিজ ক্রিকেটারদের এক সপ্তাহের বেশি সময়ের জন্য অনাপত্তিপত্র দিতে রাজি নয়। ফলে এই দুই দেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চ ৪ জানুয়ারি পর্যন্তই বিপিএলে খেলতে পারবেন। ফেব্রুয়ারির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে হওয়ায় এই সিরিজকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন খেলোয়াড়রাও।
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে পারে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। মাঝপথে অন্তত চারজন ক্রিকেটার ছাড়তে হতে পারে তাদের দল। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হেড অব অপারেশনস হাসান মাহাদী স্পষ্ট করে বলেছেন, হঠাৎ করে সিরিজ যোগ হওয়ায় পুরো পরিকল্পনাই এলোমেলো হয়ে গেছে। তার ভাষায়, এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে দলীয় কম্বিনেশন ধরে রাখা অসম্ভব। তারা এমন ক্রিকেটারই নিতে চেয়েছিলেন, যাদের পুরো মৌসুম জুড়েই পাওয়া যাবে।
টুর্নামেন্টের শেষ দিকে কয়েক ম্যাচের জন্য এক-দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি তারকা বিদেশি ক্রিকেটার আনতে পারে বলে গুঞ্জন আছে। সে জন্য নাকি যোগাযোগও শুরু হয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, সময় যত এগোচ্ছে, সম্ভাবনার দরজাগুলো ততই বন্ধ হচ্ছে।
এখনকার চিত্র বলছে, সব বাধা পেরিয়ে এবারের বিপিএলে মানসম্মত বিদেশি ক্রিকেটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা সহজ হবে না। মাঠের লড়াই শুরুর আগেই তাই সবচেয়ে বড় লড়াইটা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকেই লড়তে হচ্ছে সময়, সূচি আর বাস্তবতার সঙ্গে।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















