ভারতের কিংবদন্তি ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনির আজ ৪৪তম জন্মদিন। যে মানুষটার কাধে ভর করে ভারতীয় ক্রিকেটই পৌঁছে গেছে অন্য উচ্চতায়। শুধু নিজেই সমৃদ্ধ হননি। দেশকেও এনে দিয়েছেন একের পর এক সাফল্য।
সাফল্যের বিচারে ধোনিকে ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক বললেও আপত্তি করার কিছু থাকবে না। তিনি কী জেতাননি ভারতকে? কে জানতো, রাঁচির ছোট্ট একটা ঘরে জন্ম নেয়া এই তরুণ একদিন ভারতকে তিন ফরম্যাটেই বিশ্বসেরা করে তুলবেন?
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাস যেন নতুন করে লেখা শুরু হয়েছিল ধোনির হাত ধরেই। ১৯৮১ সালের আজকের দিনে, রাঁচিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৯৯ সালে বিহারের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার যাত্রা শুরু হয়। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দিয়ে শুরু করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
২০০৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ধোনির। এরপর ২০০৫ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক। ২০০৭ সালে পান ভারতের অধিনায়কত্বের দায়ীত্ব। আর তারপর থেকে শুরু হয় রূপকথার মতো এক ইতিহাস।
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ,
২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ,
২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি—
সবই জিতেছেন ধোনি। তার অধিনায়কত্বেই ভারত সবচেয়ে বেশি বড় শিরোপা জিতেছে।
ভারতীয় ক্রিকেটের আধুনিক শক্তি হিসেবে আবির্ভাবের যে যুগ, তার সূচনা ধোনির হাত ধরেই। ২০১৭ সালে তিনি অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এরপর আর ভারতের জার্সিতে মাঠে নামা হয়নি তার।
২২ গজে ধোনি ছিলেন দ্রুতগতির এক ক্রিকেটার। তবে একটা আক্ষেপ আমৃত্যু পোড়াবে ক্যাপ্টেন কুলকে। জাতীয় দলের হয়ে প্রথম ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছিল ধোনীকে। ২০১৯ সালের সেই সেমিফাইনালে মার্টিন গাপটিলের সরাসরি থ্রোয়ে ধোনির রানআউট হওয়া কোটি ভারতীয়ের হৃদয়ে আজও দাগ কেটে আছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও ধোনির রয়েছে অসামান্য সাফল্য। আইপিএলের প্রথম মৌসুম থেকেই তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলছেন। তার নেতৃত্বে চেন্নাই সুপার কিংস খেলেছে ১০টি আইপিএল ফাইনাল, যার মধ্যে ৫টিতে জিতেছে শিরোপা। এই দলটিকে সবচেয়ে সফল আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পরিণত করেছেন ধোনিই।
ধোনির ক্যারিয়ার এবং তার ট্রফির ঝুলিকে রূপকথা বলা চলে। ক্রিকেট ইতিহাসের বহু কিংবদন্তির সর্বকালের সেরা একাদশেও উইকেটকিপার ও অধিনায়ক হিসেবে জায়গা পান ধোনি। কেনই বা পাবেন না? এমন স্বপ্নের মতো সাফল্য কে না চায়?
