বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্র মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম পেতে যাচ্ছে এক নজরকাড়া নতুন চেহারা। আর এই পরিবর্তনের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ান টার্ফ বিশেষজ্ঞ টনি হেমিং। তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের আদলে তৈরি করছেন মিরপুরের নতুন নকশা। যেখানে থাকছে আধুনিক গ্যালারি, উন্নত ড্রেনেজ সিস্টেম, বৃষ্টিতেও খেলা চালানোর সুবিধা, দর্শকবান্ধব বসার স্থান ও অত্যাধুনিক আলোকসজ্জা।
পুরো প্রকল্পের লক্ষ্য হলো ‘স্পোর্টিং উইকেট’ তৈরি করা, যেখানে ব্যাটসম্যান ও বোলার উভয়ের জন্য সমান সুযোগ থাকবে। গামিনি দে সিলভাকে সরিয়ে হেমিংয়ের নেতৃত্বে চলছে বড় পরিবর্তন। যা শেষ হলে মিরপুর হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে আধুনিক ক্রিকেট ভেন্যুগুলোর একটি।
ধীর পিচে সমালোচনা:
মিরপুরের উইকেট ক্রিকেটবিশ্বে ধীর ও নিচু। প্রায় দুই দশক ধরে এটি দেশের সব বড় আন্তর্জাতিক ম্যাচের কেন্দ্রবিন্দু হলেও, পিচ ও মাঠের মান নিয়ে সমালোচনা ছিল দীর্ঘদিনের। এবার সেই সমালোচনার অবসানে কাজ করছে বিসিবি।
গামিনির বিদায়, হেমিংয়ের প্রত্যাবর্তন:
১৫ বছর ধরে মিরপুর স্টেডিয়ামের কিউরেটর হিসেবে দায়িত্বে থাকা গামিনি দে সিলভাকে সেপ্টেম্বর মাসে সরিয়ে দেয়া হয়। ঠিক এরপরই বিসিবি ঘোষণা দেয়—টনি হেমিং ফিরছেন। হেমিং এর আগে ২০১৯–২০ সালে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করেন। তখনও মাঠের মান উন্নয়নে প্রশংসা পেয়েছিলেন। এবার তাকে পুরো দেশের পিচ ও গ্রাউন্ড তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মিরপুরে মেলবোর্ন আদলে নকশা:
বিসিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হেমিং এবার মিরপুরকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের আদলে সাজাতে কাজ করছেন। তার পরিকল্পনায় থাকছে– আন্তর্জাতিক মানের ঘাস ও মাটি ব্যবহার, আধুনিক নিষ্কাশন ও সেচব্যবস্থা, নতুন আলোকসজ্জা ও ছাউনি ব্যবস্থা ও দর্শকবান্ধব বসার স্থান ও মিডিয়া জোন।
এই সংস্কার প্রকল্পের মূল পরিকল্পনা ও স্থাপত্য নকশা করছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি টনি হেমিং, যিনি পূর্বে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের একাধিক বিশ্বমানের স্টেডিয়ামের ডিজাইন করেছেন।
*ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও আশা:
বিসিবি জানিয়েছে, হেমিংয়ের তত্ত্বাবধানে আগামী দুই বছরে শুধু মিরপুর নয়, সিলেট, চট্টগ্রাম ও বগুড়ার উইকেটও উন্নত করা হবে। পরিকল্পনা হলো ২০২৬ সালের মধ্যে মিরপুর স্টেডিয়ামকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে আধুনিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে গড়ে তোলা।
