সেই গিলেস্পির বিপক্ষে প্রতিশোধ নেয়া হলো

২০০৬ সালে চট্টগ্রামে হওয়া সেই টেস্ট দলের কেউ এখন বাংলাদেশ দলে থাকার কথা না। তবে দেশের ক্রিকেটেই আছেন শাহরিয়ার নাফিস, হাবিবুল বাশার, আবদুর রাজ্জাকসহ রফিকরা। সাক্ষী হয়েছিলেন বেশ যন্ত্রণাদায়ক এক ঘটনার। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমে অস্ট্রেলিয়ার বোলার জেসন গিলেস্পি রীতিমত কাঁদিয়েছিলেন মাশরাফি, শাহাদাত, রফিক, রাজ্জাকদের। পুরোদস্তুর বোলার গিলেস্পি যে ব্যাটিংয়ে নেমে করেছেন ২০১! তাঁকে কেউ আউট করতে পারেন নি!

১৮ বছর পরে সেই জেসন গিলেস্পির সাথে দেখা হলো বাংলাদেশের! গিলেস্পির দলকে এবার হারিয়েছে বাংলাদেশ; ১০ উইকেটে। হোক দলটা পাকিস্তান। কিন্তু বাবর আজম- শান মাসুদদের দলটির হেড কোচ যে জেসন গিলেস্পি!

২০০৬ সালে চট্টগ্রামের টেস্টে রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার এক ইনিংস ৮০ রানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৯৭ রানে অলআউট হয়।

অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে ৫৮১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। ওই ইনিংসেই ওয়ান ডাউনে নামিয়ে দেয়া হয় পেসার গিলেস্পিকে। যিনি সব সময় নিচের দিকে ব্যাটিং করেন। টেস্টে তখন পর্যন্ত তাঁর সর্বোচ্চ রান ৪৮, সেটা ভারতের বিপক্ষে ২০০৪ সালে। বিষয়টি নিয়ে নাক উঁচু অজিরা বহুবছর মজা করেছে। ক্রিকেট বিশ্ব এখনো করে। কারণ নাইটওয়াচম্যান হিসেবে এই রান এখনো রেকর্ড।

মুশফিক-লিটন-মিরাজদের এই বাংলাদেশ নতুন বাংলাদেশ। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর বাংলাদেশ। টেস্টে যখন বাংলাদেশ নেতিয়ে পড়ছিল, ধুঁকধুঁক করছিল, সেই সময় এমন একটা জয় বড্ড দরকার ছিল। বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে জয় দেখা ভুলেই যায় বাংলাদেশ। লাল বলে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিং এ দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ।

জেসন গিলেস্পির কোনো কৌশলই কাজে আসেনি। পাঁচ পেসার নামিয়েছিলেন তিনি। ওই পাঁচ পেসারেই পিষিয়ে ফেলা হবে বাংলাদেশকে! সাদমান থেকে শুরু করে মিরাজ পর্যন্ত বেধড়ক পিটিয়েছেন পাঁচ পেসারকে। মুশফিকের অনবদ্য ১৯১ ছিল অসাধারণ। প্রতিটা ব্যাটসম্যান দেখিয়েছেন নিজেদের মেধা।

উল্টো দিকে বাংলাদেশের স্পিনারদের ভাষাই পড়তে পারেনি পাকিস্তান। গিলেস্পির অস্ট্রেলিয়া যেমন স্পিনের বিপক্ষে নির্বাক হয়ে যায়, রিজওয়ানদের অবস্থা তেমনই হয়েছে। সাকিব আল হাসান, মিরাজ মেহেদি হয়ে উঠেন সাক্ষাত যমদূত।

এটা প্রতিশোধ। জেসন গিলেস্পিকে হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছে নতুন বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশ আর যাই হোক মাথা নত করবে না!

Exit mobile version