বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় নামকে ঘিরে এমন বিশৃঙ্খলার খবর খুব কমই সীমান্ত আন্তর্জাতিক মিডিয়া দেখা যায়। কিন্তু লিওনেল মেসির ভারত সফরের প্রথম দিনেই কলকাতা ঠিক সেই কারণেই উঠে আসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে। এককথায় পুরো বিশ্ব মিডিয়ায় এখন কলকাতার বিশৃঙ্খলার খবর।
জিওএটি ট্যুরে ভারতে এসে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যে পরিস্থিতির মুখে পড়েন আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ড, তা দ্রুতই আলোচনার কেন্দ্রে চলে যায়। আয়োজকদের অব্যবস্থাপনায় মেসিকে ঠিকভাবে দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা গ্যালারিতে ভাঙচুর চালান, ব্যারিকেড ভেঙে পড়েন মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে নিরাপত্তার স্বার্থে মাত্র ২২ মিনিটের মাথায় মেসিকে মাঠ ছাড়তে হয়। ঘটনার পর আয়োজক প্রধানকে আটক করে পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। পাশাপাশি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।

এই বিশৃঙ্খলার ছবি শুধু ভারতের সংবাদমাধ্যমেই সীমাবদ্ধ থাকেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে শুরু করে ব্রিটেনের বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান পর্যন্ত একের পর এক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কলকাতার ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, যুবভারতীতে মেসির থাকার কথা ছিল এক ঘণ্টারও বেশি সময়, কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে তাকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রতিবেদনে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া এবং তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ও উল্লেখ করা হয়।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত ভিড়ে মেসি বিরক্ত হয়ে পড়েন এবং মাঠ ছাড়ার পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চেয়ার ও বোতল ছোড়ার ঘটনাও উঠে আসে তাদের প্রতিবেদনে। তারা আরও উল্লেখ করে, অনেক দর্শক হাজার হাজার টাকা খরচ করেও মেসিকে এক ঝলক দেখার সুযোগ পাননি।
দ্য গার্ডিয়ান এই ঘটনার পেছনে সরাসরি অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, দর্শকদের হতাশাই গ্যালারির বিশৃঙ্খলার মূল কারণ। আয়োজক শতদ্রু দত্তের গ্রেপ্তার এবং রাজ্য সরকারের তদন্তের সিদ্ধান্তের কথাও সেখানে উঠে আসে।
স্পেনের ক্রীড়া দৈনিক মার্কা শিরোনামে ব্যবহার করেছে ‘চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা’ শব্দটি। তাদের ভাষায়, শুধুমাত্র মেসিকে দেখার আশায় হাজার হাজার টাকা খরচ করা সমর্থকদের জন্য এই অভিজ্ঞতা ছিল হতাশাজনক। ফ্রান্সের লেকিপ ঘটনাটিকে বর্ণনা করেছে ‘বিরক্তিকর’ হিসেবে, যেখানে প্রচারণামূলক সফর দর্শকদের কাছে রূপ নেয় হতাশার গল্পে।
একটি স্মরণীয় ফুটবল মুহূর্ত হওয়ার কথা ছিল যে দিনটি, সেটিই শেষ পর্যন্ত বিশ্ব সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নেয় কলকাতার অব্যবস্থাপনা আর বিশৃঙ্খলার উদাহরণ হয়ে।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩



















