কলকাতার রাজনীতির কালো অধ্যায় দেখে গেলেন মেসি

কলকাতার রাজনীতির কালো অধ্যায় দেখে গেলেন মেসি

কলকাতার রাজনীতির কালো অধ্যায় দেখে গেলেন মেসি

লিওনেল মেসি কে এক ঝলক দেখার প্রত্যাশা থেকেই শনিবার কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়াম ভরে উঠেছিল। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় সেই উচ্ছ্বাস খুব দ্রুত রূপ নেয় ক্ষোভে। গ্যালারিতে শুরু হয় ভাঙচুর, বেষ্টনী টপকে দর্শক নামেন মাঠে, লুট হয়ে যায় চেয়ার, কার্পেট এমনকি ফুলের টবও। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়, আর ঘটনার জেরে মেসিকে ভারতে আনার উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে আটকও করা হয়।

এই বিশৃঙ্খলা কেন ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পাশাপাশি ঘটনার নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম। প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে আয়োজনের ভেতরের দ্বন্দ্ব ও অব্যবস্থাপনার ছবি।

কয়েকটি গণমাধ্যমের দাবি, মেসিকে ‘নিজের নিয়ন্ত্রণে’ রাখাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের দুই মন্ত্রীর টানাপোড়েন থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্দ্বই শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতিকে জটিল করে তোলে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে কলকাতায় পৌঁছানোর পর থেকেই মেসিকে ঘিরে এই টানাপোড়েন শুরু হয়। বিমানবন্দরে নামার পর তাকে কার্যত নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন সুজিত বসু। মেসির থাকার জায়গা হোটেল হায়াত রিজেন্সিতেও ছিল মূলত দমকলমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের উপস্থিতি। সেখানে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে তেমনভাবে কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে।

এ ছাড়া নিজের ক্লাব শ্রীভূমির সামনে মেসির ৭০ ফুটের মূর্তি উন্মোচন, তারকার সঙ্গে আলাপচারিতা কিংবা বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক উপস্থিতিতে সুজিত বসুর সক্রিয় ভূমিকাও নজরে এসেছে। অন্যদিকে আয়োজনে ‘ভিআইপি’ অতিথি হিসেবে অভিনেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সাধারণ দর্শকদের বড় অংশ গ্যালারি থেকে মেসিকে ঠিকভাবে দেখতে পাননি। সেই হতাশাই একসময় ক্ষোভে রূপ নেয়।

সব মিলিয়ে, ফুটবলপ্রেমীদের আবেগ আর আয়োজনের ভেতরের ক্ষমতার টানাপোড়েন একসঙ্গে মিশে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করে, যেখানে উৎসবের বদলে স্মৃতিতে থেকে গেল বিশৃঙ্খলার দাগ। এখন তদন্তেই স্পষ্ট হবে, এই ব্যর্থতার দায় ঠিক কোথায় গিয়ে থামে।

Exit mobile version