মেসি শিল্পী হলে স্কালোনি কারিগর

২০১৮ বিশ্বকাপটা ছিল আর্জেন্টিনার কাছে দু:স্বপ্নের। ৩৬ বছর ধরে বিশ্বকাপ ট্রফি নেই ঘরে। কোপা আমেরিকার বড় ট্রফিটাও ধরা দিচ্ছিল না মেসিদের। বিশ্ব সেরা হওয়ার জন্য লিওনেল মেসির একটাই খুঁত ছিল। তাঁর যে বিশ্বকাপ ট্রফিটা ছোয়া হয়নি।

মাঠে মেসি ছিলেন সরব। নেতা হিসেবেও ভালোই। তবে কোথায় যেন বন্ধনের অভাবটা ছিল। যেন এক সুতোয় গাঁথা যাচ্ছিল না। সেই কাজটিই করলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। ২০১৮ সালের দু:সময়ে মেসিদের দায়িত্ব নিলেন তিনি। এরপর থেকেই যেন বদলে গেল সব।
কোপা আমেরিকার পর ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ট্রফিটাও হলো মেসির আর্জেন্টিনার। মেসিরাই কাঁধে চড়িয়ে স্কালোনিকে নিয়ে উল্লাস করেছেন। সেই স্কালোনি ঘোষণা দিলেন তিনি এবার থামতে চান। আপাতত বলটা পাস করে দিতে চান সামনের দিকে। স্কালোনি আর আর্জেন্টিনার কোচ থাকবেন না। মঙ্গলবার ব্রাজিলর সাথে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পর এরই ইঙ্গিত দিয়েছেন স্কালোনি।

মারকানায় ঘরের মাটিতে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। দারুণ এক হেডে দলকে জয় এনেদেন ওটামেন্ডি। তবে মাঠে ও মাঠের বাইরে মারামারির কারণে ম্যাচটা যে খুব উপভোগ্য ছিল তা বলা যাবে না।
তরুণ মেসির সতীর্থ হয়ে আর্জেন্টিনা দলে খেলেছেন এক সময় লিওনেল স্কালোনি। মেসির স্বপ্নটাকে পূর্ণ করতেই তিনি কোচ হয়ে নেমেছিলেন এক মিশনে। কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নের পর বিশ্বসেরার তকমা; কোনো কিছুতেই আর অপূর্ণ নেই মেসি।

সৌদি আরবের সাথে প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খাওয়া দলটি এভাবে ঘুরে দাঁড়াবে কে জানতো? সে দলটিই একে একে সব বাধা দূর করে জয় করে নিলো বিশ্বকাপ।

আলভারেজ, ফার্নান্দেজ, ম্যাকঅ্যালিস্টারদের মত তরুণদের সাথে ডি পল-ওটামেন্ডিদের সমন্বয় করাটা ছিল বেশ চ্যালেঞ্জের। প্রয়োজন ছিল মার্টিনেজের মত বিশ্বস্ত বেশ দক্ষ গোলরক্ষক। যিনি ২০১৮ বিশ্বকাপেও ছিলেন দর্শক। সবার স্কিলকে একটি সুতোয় বাঁধার কাজটা সুনিপুণভাবে করেন স্কালোনি। মন্টিয়েল, রোমেরো, মলিনাদের এক সুতোয় রাখা, এক তালে যেন সবাই এগিয়ে যায়, সব দিকেই খেয়াল রেখেছেন তিনি। দিবালা, ডি মারিয়ার মত ফুটবলারদের সময় মত খেলানো, প্রতিপক্ষকে যথাযথভাবে পড়ে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করা; এক অর্থে যেন দক্ষ কারিগর। মেসি শিল্পী হলে স্কালোনি দক্ষ কারিগর।

ফুটবলের এই দারুণ কারিগরের পরবর্তী গন্তব্য কোথায়, তা জানার আগ্রহ থাকবে সবার।

Exit mobile version