নারী জাগরণ (ক্রীড়া) বিভাগ থেকে বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন জাতীয় দলের তারকা ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত বেগম রোকেয়া দিবসের অনুষ্ঠানে এই পদক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর ঋতুপর্ণাসহ চার নারীকে দেওয়া হয়েছে বেগম রোকেয়া পদক। নারীশিক্ষা ও অধিকার আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী ও ৯৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। নানা আয়োজনে দিনটি পালন করছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল পরপর দুবার (২০২২ ও ২০২৪) জিতেছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে এশিয়ান কাপে মূল পর্বেও। এই পথচলায় বড় ভূমিকা রেখেছেন রাঙ্গামাটির মেয়ে ঋতুপর্ণা। এই সাফল্যে পুরস্কার হিসেবে এর আগে প্রথমবারের মতো একুশে পদক পেয়েছে জাতীয় নারী ফুটবল দল। এবার ঋতুপর্ণা পেলেন রোকেয়া পদক।
পাহাড়সম বাধা পেরিয়ে এই পর্যায়ে আসা ঋতুপর্ণা পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত। পদক পাওয়ার পর প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব পুরস্কারই সম্মানের। তবে এটার গুরুত্বটা বেশি। যেহেতু এটা জাতীয় পুরস্কার। তবে এ পুরস্কার দেশের নারীদের আরও বেশি অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
২০২১ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলছেন ঋতুপর্ণা। লাল–সবুজ জার্সিতে ৩৩ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল। ২০২৪ সাফে হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। এ বছর জুন-জুলাইয়ে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত এশিয়ান বাছাইয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ গোল করেন।
ঋতুপর্ণার মা ভূজোপতি চাকমা দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। ২০১৫ সালে বাবা বরজ বাঁশি চাকমা মারা যান, তখন তাঁর বয়স ১১ বছর। ২০২২ সালের জুনে বিদ্যুৎস্পর্শে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ঋতুপর্ণার ভাই পার্বণ চাকমার। একের পর এক স্বজন হারানোর কষ্ট বুকে চেপে গ্যালারিভরা দর্শকদের মাতাচ্ছেন ঋতুপর্ণা। ফুটবল পায়ে দেখাচ্ছেন ঝলক। তারই স্বীকৃতি এই রোকেয়া পদক।
এমন খুশির দিনে কিছুটা আবেগাপ্লুত ঋতুপর্ণা। বাবা ও ভাইকে খুব মিস করছেন। বললেন মায়ের আত্মত্যাগের কথাও, ‘আজ বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। ভাইটাকেও মিস করছি। আমার মা অনেক সংগ্রাম করছেন। আমার এত দূর আসার পেছনে পুরো পরিবার, আমার টিমমেটদের অবদান অনেক।’
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩









