বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ঐতিহাসিক একটি দিন ছিল বুধবার। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নামেন মুশফিকুর রহিম। দিনটিকে তাই স্মরণীয় করে রাখতে আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট বাংলাদেশ দল নামার আগে জমকালো আয়োজন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। প্রথম দিনের খেলা শেষে মুমিনুল হক জানালেন, তারা ভেবেছিলেন মুশফিকের অবসরে যাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
অল্পের জন্য প্রথম দিনেই আরেকটি গৌরবময় ইতিহাস ছুঁতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ১ রানের জন্য এদিন পূর্ণ করতে পারেননি সেঞ্চুরি। ১৮৭ বলে ৫ চারে ৯৯ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। শততম টেস্টে সেঞ্চুরির ক্ষেত্রে মুশফিক হবেন ইতিহাসের মাত্র ১১তম ব্যাটার। এ কারণে দিনের ৯০ ওভার শেষ হয়ে গেলেও বাংলাদেশ দলের ইচ্ছা ছিল আরেক ওভার অন্তত খেলার। আম্পায়াররাও একটু দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগেছেন। তবে আয়ারল্যান্ড আর খেলতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা বেড়েছে মুশফিকের অবিস্মরণীয় সেঞ্চুরির। তবে মুমিনুল দাবি করেছেন, এতে বাংলাদেশ দল বিচলিত নয়।

মুশফিকের সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল পুরো মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এমনকি প্রেসিডেন্ট বক্সের ব্যালকনিতে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলসহ বাকি পরিচালকরাও ছিলেন দাঁড়িয়ে। ড্রেসিংরুমে কোচিং স্টাফসহ সতীর্থরাও অধীর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মুশফিকের সেঞ্চুরির। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন,‘একসময় মনে হচ্ছিল, আজকে হয়ে যাবে (সেঞ্চুরি)। যদিও ওরা দেরি করেছে (বোলিংয়ে), এই কারণে হয়তো হয়নি। আমিও খুব বেশি চিন্তিত না, কারণ উনি আগেও ১০০ করেছেন, ২০০ করার অভ্যাস আছে।’
ঐতিহাসিক একটি অর্জনে ১ রান দূরে থেকে পুরো একটা রাত অপেক্ষা করতে হবে। কিংবদন্তিদের কাতারে যাবেন মুশফিক। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেছেন,‘ ওই জায়গায় উনি প্যানিক (বিচলিত) হয় না। প্যানিক কম হয় আল্লাহর রহমতে, সেই কারণে আত্মবিশ্বাস আছে। অন্য কেউ থাকলে হয়তো একটু চিন্তায় থাকতাম। উনি যেহেতু আছে, আমার মনে হয় উনিও প্যানিক হয় না, আমরাও কেউ প্যানিক না। কালকে ইনশাআল্লাহ হয়ে যাবে।’
এমনকি মুমিনুল মনে করেন ডাবল হান্ড্রেড করার সামর্থ্য এ ম্যাচেই আছে মুশফিকের। দেশের পক্ষে সর্বাধিক ৩টি ডাবল সেঞ্চুরি তার। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেছেন,‘ রান করুক, না করুক- তার জিম, রানিং, ফুড থেকে শুরু করে সব চলতে থাকে। অনেকে থাকে যে একটু হতাশা থাকে। উনার মধ্যে কোনো হতাশাও নেই। সব নিয়ন্ত্রণ করে চলতে থাকে। তো ওটা আমার কাছে মনে হয় ওটা একটা ফল এখন… উনি ১০০ টেস্ট আসলে উনি ডিজার্ভ করেন। আর এর সঙ্গে কালকে যদি উনি ২০০ করেন, সেটাও উনি ডিজার্ভ করেন।’

মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্টে নামার উপলক্ষে বিসিবি অনেক পরিকল্পিত আয়োজন রেখেছে। ম্যাচের আগে বিশেষ কিছু স্মারকও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ ক্যাপ, একাধিক ক্রেস্টও আছে। টেস্ট দলের সতীর্থরাও উপহার দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মুমিনুল বলেছেন,‘একটা সময় মনে হচ্ছিল, এটা (মুশফিক ভাইয়ের সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়টি) অবসরের দিকে যাচ্ছে। পরে দেখি না, শততম ম্যাচ উদযাপন হচ্ছে। বাইরের দেশে তো অবসরে গেলে এমন আয়োজন হয়। আমার মনে হয়, এরকম একটা মানুষ আসলে বাংলাদেশে… আমি জানি না দ্বিতীয়বার কেউ তৈরি হবে কি হবে না অথবা জন্মাবে কিনা।’
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















