বাংলাদেশের একমাত্র সাফজয়ী কোচ জর্জ কোটান আর নেই

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সর্বোচ্চ সাফল্য বলতে ঘরের মাঠে ২০০৩ সালে সাফ ফুটবলের শিরোপা জয়। সেই দলটার অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান আর নেই। গত সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর কোটান পৃথিবীর মায়া ছাড়লেও বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এই খবর পৌঁছায় ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার।

সাফল্য, ব্যক্তিত্ব, আন্তরিকতার মিশেলে গড়া পেশাদারিত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে আপন করে নেয়া কোটানের মৃত্যুর বিষয়টি সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে নিশ্চিত করা না গেলেও তার একাউন্ট থেকে একটি শোক বার্তাকে ভিত্তি হিসেবে ধরে নেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও রাশেদুল ইসলাম কোটানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ জর্জ কোটান আর নেই। গত ২৫ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। আগামী ৬ অক্টোবর হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। বিষয়টি হাঙ্গেরি ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আমাকে নিশ্চিত করা হয়েছে।’

দেশের শীর্ষস্থানীয় ক্লাব আবাহনী লি: তাদের সাবেক কোচের মৃত্যুতে ফেসবুক পেইজে একটি শোকবার্তা দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আবাহনীর সাবেক কোচ জর্জ কোটান আর নেই। বাংলাদেশ অনুরাগী অস্ট্রিয়ান ২০১৪-১৫, এই দুই বছঅবর আবাহনীর দায়িত্বে থেকে ২০১৫ সালে বিপিএল শিরোপা জেতেন। ২০০৩ সালে তার হাত ধরেই সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।’

জর্জ কোটানের মৃত্যুর কথা জানিয়ে আজ সকালে তাঁরই সাবেক শিষ্য বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘তোমার চলে যাওয়া বিশ্বাস করতে পারছি না প্রিয় কোচ। তুমিই আমাদের শিখিয়েছ সাফল্য পেতে একে অন্যের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। একটা দল হিসেবে খেলতে হবে। তুমি তোমার খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করতে এবং সবার প্রতি সবার সম্মান ছিল। যার ফসল হিসেবে ২০০৩ সালে আমরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। আমি ভাবতেই পারছি না তুমি আমাদের ছেড়ে চলে গেছ এবং চলে গেছ সেখানে, যেখান থেকে কেউ আর ফিরে আসে না। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি তোমার পরিবার যেন এই শোক সইতে পারে। ভালো থেকো প্রিয় কোচ। তোমার আত্মা শান্তি লাভ করুক।’

২০০৩ সাফজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গোলরক্ষক আমিনুল ইসলাম ফেসবুকে আবেগঘন পোস্টে বলেন, “বিদায় কিংবদন্তি জর্জ কোটান…

পিতৃতুল্য কোটানের ভাবশিষ্য হিসেবে আমি গেয়েছিলাম জীবনের জয়গান। তাঁর হাত ধরেই জিতেছিলাম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। সময়টা ছিলো ২০০৩ সাল। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রমাণ করেছিলাম বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব। তাঁর কাছ থেকে শিখেছিলাম কিভাবে সময়ের সাথে লড়াই করে মৃত্তিকার সাথে পিঠ মিশিয়ে বিজয় উল্লাসে মেতে থাকা যায়।

পিতৃতুল্য কোটান,

বড় অসময়ে চলে গেলে তুমি। তোমার শেখানো পথে আমার কণ্টক যাত্রায় সকলের মুখে হাসি ফোটাবো আবার। তোমার দেখানো পথে লড়াই করে সফলতার যে স্পৃহা আমার তৈরি হয়েছিলো তা আজও বিদ্যমান।

পরপারে ভালো থেকো লিজেন্ড।”

২৫ সেপ্টেম্বর মারা গেলেও ৬ অক্টোবর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজন সম্পর্কে জানানো হয়েছে, ১৯৪৬ সালের ৬ অক্টোবর তিনি হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে জন্ম নিয়েছিলেন। ফলে জন্মদিনেই তাঁকে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার।

অবশ্য জাতীয় দলের সাবেক এই কোচের মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন-বাফুফে এখনও পর্যন্ত কোন বিবৃতি দেয়নি।

Exit mobile version