আবার শেষ ওভারের থ্রিলারে হারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় আরেকটি জয় নিউজিল্যান্ডের

নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের যেন তীরে গিয়েই তরী ডুবছে বারবার। ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের অন্তত দু’টিতে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের পর হেরেছে তারা। এবার ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেরও প্রথমটিতে তেমন এক উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ের পর ৭ রানে হেরেছে ক্যারিবিয়রা। শেষ ৩ ওভারে ৩৭ রান নিয়েও কাজ হয়নি, শেষ দুই বলে ৯ রান করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই ক্রাইস্টচার্চে আজ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।

টস জিতে আগে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৪  রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়লেও তৃতীয় উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েন ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেল। ৫৮ বলে ৭ চার, ১ ছয়ে ৪৯ রানে আউট হন কনওয়ে। এরপর মূলত মিচেল একাই ক্যারিবিয় বোলারদের শাসন করেছেন।

কারণ, টম লাথাম ৩০ বলে ১৮, মিচেল স্যান্টনার ১০ বলে ১১ রানে আউট হন। মাঝে পঞ্চম উইকেটে অবশ্য মাইকেল ব্রেসওয়েলকে নিয়ে ৬৯ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন মিচেল। ব্রেসওয়েল ৫২ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ৩৫ রানে বিদায় নেন। আর মিচেল হাঁকিয়েছেন তার ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ক্যারিয়ারসেরা ১৩৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এই মিডলঅর্ডার ১১৯ বলে।

তারপর ১৫ ইনিংস ব্যাট করেছেন, ঠিক দুই বছর ১ দিন পেরিয়েছে। অবশেষে আরেকটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১১৮ বলে ১২ চার, ২ ছক্কায় করলেন ১১৯ রান। শেষদিকে জ্যাক ফোকস ১৬ বলে ৩ চারে অপরাজিত ২২ রান করেন। নিউজিল্যান্ড ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে তোলে ২৬৯ রান। দুই পেসার জেইডেন সিলস ৩টি ও ম্যাথু ফোর্ড ২টি উইকেট নেন।

ঠিক ২ বছর পর আবার ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হাঁকালেন ড্যারিল মিচেল

জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ১০ রানে দীর্ঘদিন পর ফেরা জন ক্যাম্পবেলের (৪) উইকেট হারিয়ে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর অবশ্য আলিক অ্যাথানেজ ৫৮ বলে ২৯, কিয়েসি কার্টি ৬৭ বলে ৩১ রানের দুটি সংগ্রামী ইনিংস খেলেছেন। এতে করে চাপ বেড়েছে উইন্ডিজ দলে। কারণ ২৮ ওভার লেগেছে দলীয় ১০০ রান হতে এবং ততোক্ষণে ৩ উইকেটও পড়ে গেছে।

তবে এরপর শাই হোপ ৪৫ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ৩৭ রান ও শেরফানে রাদারফোর্ড হাফ সেঞ্চুরি করে ক্যারিবিয়ানদের জয়ের আশা দেখান। ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে রাদারফোর্ড ৬১ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৫৫ রানে সাজঘরে ফেরেন। ওই সময় ৬ উইকেটে ২০৯ রান ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তখনও ২৯ বলে উইন্ডিজের জয়ের জন্য ৬১ রান দরকার।

জাস্টিন গ্রিভস ও রোমারিও শেফার্ড দারুন লড়াই করেছেন। শেষ ৩ ওভারে তারা ৩৭ রানও তুলে নেন। কিন্তু পেসার জ্যাকব ডাফির করা শেষ ওভারে প্রয়োজনীয় ২০ রান করতে পারেননি তারা। ৪ বলে ১১ রান তুলে নিলেও শেষ ২ বলে ৯ রানের জায়গায় মাত্র ১ রান করতে পেরেছেন শেফার্ড। ফলে রোমাঞ্চকর এক পরিস্থিতি তৈরি করে শেষ পর্যন্ত ৭ রানে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৬২ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গ্রিভস ২৪ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ৩৮ ও শেফার্ড ১৯ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। কাইল জেমিসন ১০ ওভারে ১ মেডেনে ৫২ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।

নিউজিল্যান্ড ইনিংস- ২৬৯/৭; ৫০ ওভার (মিচেল ১১৯, কনওয়ে ৪৯, ব্রেসওয়েল ৩৫; সিলস ৩/৪১, ফোর্ড ২/৫৫)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস- ২৬২/৬; ৫০ ওভার (রাদারফোর্ড ৫৫, গ্রিভস ৩৮*, হোপ ৩৭, কার্টি ৩২; জেমিসন ৩/৫২)।

ফলঃ নিউজিল্যান্ড ৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচঃ ড্যারিল মিচেল (নিউজিল্যান্ড)।

Exit mobile version