কিছুদিন পর টেস্ট দলে ফিরেছেন। আর ফিরেই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে করেছেন ১৭১ রান। ডাবল সেঞ্চুরি হতে পারতো, সেটি মিস করাতে কিছুটা হতাশ মাহমুদুল হাসান জয়। তবে সার্বিকভাবে তিনি সন্তুষ্ট এই কারণে যে ফেরার পর ভালো স্কোর পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার সিলেট টেস্টর তৃতীয় দিনশেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আরেক সেঞ্চুরিয়ান, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেন জয়।
টানা ১৭ ইনিংস কোনো হাফ সেঞ্চুরি পাননি। শেষ পর্যন্ত টেস্ট দল থেকেই বাদ পড়েন ডানহাতি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর নিজের ব্যাটিং নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। খুব বেশি কিছু পরিবর্তন ঘটাননি ব্যাটিং স্টাইলের। তবে প্রত্যাবর্তনটা হয়েছে স্বপ্নের মতো। নিজের পরিবর্তন নিয়ে জয় বলেছেন,‘হ্যাঁ, ব্যাটিং নিয়ে বেশ কাজ করেছি। টেকনিক্যালি কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসছি। আগে হয়তো শাফলটা একটু বড় করতাম ওটা কমিয়ে এনেছি। তেমন আর বড় কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।’
২০২২ সালে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট ও মাত্র চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমেই ১৩৭ রানের বিস্ময়কর ইনিংস খেলেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। সেটি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডারবানে। তারপর মাঝে ৩০ ইনিংসে মাত্র ৩ ফিফটি করতে পেরেছেন। এবার বাংলাদেশী ওপেনার হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেন। যেভাবে খেলছিলেন করতে পারতেন ডাবল সেঞ্চুরিও। কারণ আগের দিন ১৬৯ রানে অপরাজিত থেকে তৃতীয় দিন শুরু করেন। সেটি না হওয়াতে জয় বলেছেন,‘হ্যাঁ, অবশ্যই একটু হতাশ। কারণ আমার জীবনের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি হতে পারত যদি আমি শেষ পর্যন্ত ক্যারি করতে পারতাম। আমি বলব, একটু হতাশ যে শেষ পর্যন্ত পারিনি।’
ডানহাতি এই ওপেনার অবশ্য টেস্টে বেশ কঠিন সময় পার করছিলেন। ২০২৩ সালে সর্বশেষ ফিফটি পেয়েছিলেন। তাই এখন ফেরার পর বড় ইনিংস খেলতে পেরে সন্তুষ্ট মাহমুদুল হাসান জয়। তিনি বলেছেন,‘সবমিলিয়ে বলব আমি সন্তুষ্ট। কারণ অনেক দিন পর দলে ফিরে বড় ইনিংস খেলতে পেরেছি। তবে যদি ডাবল সেঞ্চুরি হতো, আরও ভালো লাগত। ওই দিক থেকে একটু হতাশ।’
এবার ন্যাশনাল ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি আসরে একটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন। আবার লঙ্গার ভার্সনের এনসিএলেও দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন সিলেট টেস্টে নামার আগে। সেখানেও রান পেয়েছেন। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সেঞ্চুরি তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। জয় বলেছেন,‘আসলে এনসিএল টি-টোয়েন্টির সেঞ্চুরি থেকে আমি নিজেকে আরও বুস্টআপ করতে পেরেছি। কারণ ওইখানে খুব ভালো পারফর্ম হয়েছে। এরপর এনসিএল চারদিনের ম্যাচেও ভালো পারফর্ম ছিল। সুতরাং আমি চেষ্টা করেছি ওইখানে যেমন ইনিংসটা বড় করতে পেরেছি, এখানে এসেও যেন একই কাজটা করি। ভিন্ন কিছু করব না, শুধু এনসিএলে যেভাবে খেলে এসেছি ওইভাবে ক্যারি করব।’
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও দারুন এক সেঞ্চুরি পেয়েছেন চলমান সিলেট টেস্টে। মাত্র ১১৪ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি ওয়ানডে মেজাজে। তার ইনিংসের প্রশংসা করে জয় বলেন,‘দেখেন, উনি (শান্ত) যখনই ব্যাটিংয়ে নামেন, খুব আক্রমণাত্মক খেলেন। আমরা যখন ওপেনিংয়ে ভালো শুরু দেই, তখন লেট অর্ডারের মতো যারা আসে, মুশফিক ভাই, শান্ত ভাই- তাদের জন্য সহজ হয়ে যায়। তখন স্কোরিংয়ের অপশনও বেড়ে যায়। আমি বলব, ওনার ইনিংসটা ছিল দারুণ।’
তৃতীয় দিনশেষে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ২১৫ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ড ইতোমধ্যে ৫ উইকেট হারিয়েছে মাত্র ৮৬ রান তুলতেই। ইনিংস ব্যবধানের জয় হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। এ বিষয়ে জয় বলেন,‘আজকে খুব ভালো শেষ হয়েছে। শেষের দিকে তাইজুল ভাই, মুরাদ খুব ভালো ফিনিশ করেছে। কাল সকালে যদি একটা-দুইটা উইকেট নিতে পারি, তাহলে ওদের লেট অর্ডার চলে আসবে। তখন আরো সহজ হবে, হয়তো কালকের মধ্যেই ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।’
