১৯৯৯ সাল। ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো মাঠে নামা টাইগারদের। সেই থেকে শুরু। এরপর টানা ষষ্ঠবারের মতো টাইগাররা অংশ নিয়েছে ক্রিকেটের এই মহাযজ্ঞে। ২০২৩ বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের মাধ্যমে সাতবারের মতো বিশাল এই টুর্নামেন্ট খেলতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। টাইগারদের এবারের পারফরমেন্স কেমন হবে তা দেখতে মুখিয়ে আছেন দেশের সব ক্রিকেট পাগল মানুষ। এ যাবতকালে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়গুলো নিয়েই আমাদের এই আয়োজন।
প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। সেসময় টাইগাদের জন্য রীতিমতো নতুন অধ্যায় রচনা হয়। ওয়াসিম আকরাম-ওয়াকার ইউনুস ও শোয়েব আকতারদের মতো বোলারদের বিপক্ষে ব্যাট করে ২২৩ রান হাঁকায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়ে নতুন এক বিস্ময়ের জন্ম দেয়া টাইগাররা জানিয়েছিলো তারা আসছে। বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়গুলোর কথা আলোচনা করলে প্রথমেই আসে পাকিস্তানকে হারানোর কথা।
অবশ্য ২০০৩ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে লজ্জাজনক ঘটনার জন্ম দিয়ে হেরে যায় কানাডার কাছে। শেষ পর বিদায় নিতে হয়েছিলো গ্রুপ পর্ব থেকেই। তবে ভয়ঙ্কর দল হিসেবে ফিরেছিলো ২০০৭ সালে ক্যারিবীয় আসরে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতকে পরাজিত করে তাদের প্রুপেই বিদায় ঘন্টা বাজিয়ে দিয়েছিলো। ওই আসরের পর থেকে বিশ্বকাপের ফর্মেটেই পাল্টে যায়। কারণে গ্রুপ পর্বে ভারতের বিদায় নিশ্চিত হওয়ায় বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলো ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসি।
এরপর ২০১১ সালে ঘরের আসর নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা অনেক বাড়তে থাকে। তিনটি জয়ের পরিপূর্ণ স্বাদ পেলেও বিষাদ নেমে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পরাজয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৫৮ রান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৭৮ রানে অসহায় হয়ে নিজেদের অনেকটা আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ। এভাবেই গ্রুপ পর্বের দেয়াল টপকাতে ব্যর্থ হয় টাইগারা।
এরপর ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ ছিলো বাংলাদেশের জন্য অনেকটা আর্শীবাদের মতো। ইংল্যান্ডকে রীতিমতো কাঁদিয়ে তিনটি জয় আর একটা ড্র নিয়ে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালের মুখ দেখে বাংলাদেশ। যা এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ অর্জন।
২০১৯ সালে তিনটি জয় পেলেও সব মিলিয়ে আলোর দেখা পায়নি বাংলাদেশ। তবে একটি নাম যেনো রীতিমতো নতুন করে হইচই ফেলে দেয়। সেটা হলো সাকিব আল হাসান। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ৬০০ রান ও ১০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। গ্রুপ পর্বের বাধা টপকাতে পারলে সেবার হয়ত সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব পেতে পারতেন সাকিব আল হাসান। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি।
এবার দেশ ছাড়ার আগে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিলেও দেশের মানুষের প্রত্যাশা স্মরণীয় সাফল্যই উপহার দিবেন সাকিব-মুশফিকরা। সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা আগেই বলে রেখেছেন, ২০২৩ বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। এর রেশ ধরেই অধিনায়কত্ব পেয়ে তামিম ইকবাল বলেছিলেন বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেতৃত্ব থাকলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলতে যাবেন তিনি। কিন্তু সেই তামিমই এখন দলের বাইরে। সাকিব-তামিম ডামাডোলে কেমন হবে বাংলাদেশের পারফরমেন্স তার দিকেই চোখে ক্রিকেটপ্রেমী কোটি মানুষের।