সেমিফাইনালে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের পর সুপার ওভারের নাটকীয়তায় ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সেটি ছিল হাই-স্কোরিং ম্যাচ। ফাইনালে আবার চরম নাটকীয়তার পর সুপার ওভারে শিরোপার ফয়সালা হয়েছে। এবার লো-স্কোরিং থ্রিলারে ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েছে পাকিস্তান ‘এ’ দলের পক্ষে। তাই এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস আসরে রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ৬ বছর আগে ঘরের মাঠে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ নামে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার ফাইনালে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। এবার এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস নামের একই টুর্নামেন্টের ফাইনালেও তাদের কাছেই হারল বাংলাদেশ।
কাতারের দোহায় আগে ব্যাট করে পাকিস্তান ‘এ’ দল ২০ ওভারে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায়। কিন্তু লো-স্কোরিং এই ম্যাচটি রীতিমতো গা ছমছমে থ্রিলারে পরিণত হয়। জবাবে স্বীকৃত ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতায় ৫৩ রানে ৭টি ও ৯৬ রানে ৯টি উইকেট হারানোর পরও লেট অর্ডারদের বিস্ময়কর ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে বাংলাদেশ ‘এ’ দলও ১২৫ রান করে। ফলে সুপার ওভারে গড়িয়েছিল ম্যাচটি।
টস জিতে আগে পাকিস্তান ‘এ’ দলকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ ‘এ’। বাংলাদেশী বোলারদের দাপটে ওয়েস্ট এন্ড পার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটাররা হিমশিম খেয়েছেন। একপ্রান্তে হুড়মুড়িয়ে উইকেটের পতন ঘটেছে। তবে আরেক প্রান্তে কিছুক্ষণ লড়াই করে মাজ সাদাকাত ১৮ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ২৩ রান করেন। তাই ৬৪ রানে ৫ উইকেট হারালেও রানরেট ঠিক ছিল পাকিস্তানের। কারণ তখন মাত্র ১০.৪ ওভার। আরাফাত মিনহাসও ২৩ বলে ২ চারে ২৫ রান করে আউট হন।
সাদাকাত-মিনহাস সাজঘরে ফেরার পর রান তোলার গতি কমেছে পাকিস্তান ‘এ’ দলের। কিন্তু সপ্তম উইকেটে ২৪ বল ৪১ রানের জুটি গড়েন শহিদ আজিজ ও সা’দ মাসুদ। তাই শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ‘এ’ দল ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান করতে পেরেছে। সা’দ মাসুদ ২৬ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৩৮ রান করেন।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পক্ষে রিপন মণ্ডল ৪ ওভারে ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান ৪ ওভারে ১৬ রানে ২ উইকেট নেন।

লো-স্কোরিং ম্যাচে চাপটা বেশিই থাকে। আর ফাইনালের উইকেট ব্যাটারদের জন্য সহজ ছিল না। তবু ওপেনার হাবিবুর রহমান সোহান ১৭ বলে ৩ চার, ২ ছয়ে ২৬ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তবে অন্যদিকে ব্যাটাররা উইকেটে যাওয়া-আসার মিছিলে ছিলেন। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে ১০.৩ ওভারে বাংলাদেশ ‘এ’ এক সময় ৫৩ রানেই ৭ উইকেট হারায়।
তখন নিশ্চিত পরাজয়ই দেখছিলেন সবাই। কিন্তু এসএম মেহেরব ও রাকিবুল হাসান ৩৭ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটান। মেহেরব ২১ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ১৯ রানে আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরই রাকিবুলও ২১ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ২৪ রানে সাজঘরে ফেরেন। ৯৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত পরাজয়ের প্রহর গুণতে থাকে বাংলাদেশ।
তখনই বিস্ময়কর ব্যাটিংয়ে সবাইকে চমকে দেন আব্দুল গাফফার সাকলাইন ও রিপন মণ্ডল। মাত্র ১৪ বলে তারা ২৯ রান তুলে নিয়ে ম্যাচ ‘টাই’ করেন। শহিদ আজিজের করা ১৯তম ওভারেই তারা ২০ রান তুলে নিয়ে মাঠের দর্শকদের হতবাক করে দেন। তবে শেষ ওভারে ৭ রান প্রয়োজন থাকলেও আহমেদ দানিয়াল মাত্র ৬ রান দিয়েছেন। তাই ম্যাচটি টাই হয়। আব্দুল গাফফার ১২ বলে ২ ছয়ে ১৬ ও রিপন ৯ বলে ১ ছক্কায় ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। সুফিয়ান মুকিম ৪ ওভারে ১১ রানে ৩টি ও দানিয়াল ৪ ওভারে ১১ রানে ২টি উইকেট নেন।
সুপার ওভারে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ‘এ’ দল দানিয়ালের করা বোলিংয়ে ২ উইকেট হারিয়ে ৩ বলে ৬ রান করতে পেরেছে। আর পাকিস্তান ‘এ’ দল রিপন মণ্ডলের করা ৪ বলেই ৭ রান তুলে জিতে যায়। আবার ফাইনালে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় বাংলাদেশের।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















