সোমবার শেষ হয়েছে নারী কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত নারী কাবাডি দল। মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আজ অনুষ্ঠিত ফাইনালে চাইনিজ তাইপেকে হারিয়ে দেয় তারা। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই শেষে স্কোর লাইন ছিল ৩৫-২৮! ২০১২ সালের প্রথম বিশ্বকাপেও চ্যাম্পিয়ন হয় ভারতের মেয়েরা। ১৩ বছর পর অনুষ্ঠিত আসরেও শিরোপা ধরে রাখল তারা। এবার নিজেদের সেরা সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল। সেমিফাইনালে চাইনিজ তাইপের কাছে ২৫-১৮ পয়েন্টে হেরে তৃতীয় হয়ে জিতেছে ব্রোঞ্জ। বাংলাদেশের খেলোয়াড় স্মৃতি আক্তার টুর্নামেন্টের সেরা ডিফেন্ডার নির্বাচিত হয়েছেন।
টুর্নামেন্ট জুড়েই ফেভারিট ভারত অপ্রতিরোধ্য থেকেছে। গ্রুপ পর্বে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডকে হারিয়েছে। সেমিফাইনালে ২০১২ সালের রানার্সআপ ইরানকে হারিয়েছে। ফাইনালেও সেই দাপট ধরে রেখেছে। যদিও চাইনিজ তাইপে কঠিন চ্যালেঞ্জেই ফেলে ভারতকে। অথচ ২০১২ সালের প্রথম বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বও পেরোতে পারেনি চাইনিজ তাইপে। সেবার ৬ ম্যাচের সবগুলো জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। এবারও শতভাগ জয়ের রেকর্ড ধরে রেখেছে তারা।
আজ ফাইনালের আগে টস করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম। টস জিতে ভারতকে প্রথমে রেইড করার আমন্ত্রণ জানায় চাইনিজ তাইপে। সাঞ্জু দেবী প্রথম রেইডেই পয়েন্ট আনেন, জবাবে চুয়াং ইয়া-হান বোনাস পয়েন্ট নিয়ে লড়াই জমিয়ে তোলেন। এক পর্যায়ে স্কোর লাইন ৭-৭ সমতায় দাঁড়ায়। এরপর পূজাকে সুপার ট্যাকল করে ৯-৭ পয়েন্টে এগিয়ে যায় তাইপে।
ম্যাচের ১২তম মিনিটে ভারতীয় তারকা সাঞ্জু দেবী একাই প্রতিপক্ষের ৪ খেলোয়াড়কে আউট করে দলকে ১৩-১২ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। এরপর দ্রুতই তাইপেকে অলআউট করে ১৭-১৪ পয়েন্টের লিড নেয় ভারত। প্রথমার্ধ শেষে ভারতের লিড ২০-১৬ পয়েন্টে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পুষ্পা রেইডে তিন পয়েন্ট তুলে ভারতের লিড আরও বাড়ান। কিছুক্ষণ পর চাইনিজ তাইপে ব্যবধান কমিয়ে আনে ২৫-২২ পয়েন্টে। ম্যাচ শেষ হওয়ার মাত্র চার মিনিট আগে সুপার ট্যাকল করে স্কোরলাইন ৩০-২৬ এ নামিয়ে আনে তাইপে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাইপেকে দ্বিতীয়বার অলআউট করে ৩৫-২৮ পয়েন্টের নিশ্চিত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।
মেজর কাবাডি আসরে চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে অপরাজিত থাকল ভারত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর এশিয়ান গেমসের ফাইনালে দুর্দান্ত লড়াইয়ের পর ২৬-২৫ পয়েন্টে জিতে স্বর্ণপদক অর্জন করে ভারত। সেবার দুই দলের গ্রুপ পর্বের লড়াইও ছিল এখন পর্যন্ত সেরা। দারুণ উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচ শেষ হয় ৩৪-৩৪ পয়েন্টের সমতায়।
ফাইনাল শেষে টুর্নামেন্টের সেরা ডিফেন্ডার মনোনীত হয়ে বাংলাদেশের স্মৃতি আক্তার বলেন,‘অনেক খুশি লাগছে দেশের মাটিতে এত বড় অর্জন করতে পেরেছি। আমরা দেশকে পদক দিতে পেরেছি এর চেয়ে বড় খুশি আর কোথাও নেই। আলহামদুলিল্লাহ। পরের লক্ষ্য এর চেয়ে ভালো কিছু করা। ইনশাআল্লাহ আমরা চ্যাম্পিয়ন ফাইট দেব পরের বিশ্বকাপে।’
টুর্নামেন্টের মোস্ট ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড় হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন ভারতের সঞ্জু দেবী। আর সেরা রেইডার মনোনিত হয়েছেন রানার্সআপ চাইনিজ তাইপের মিম লিন।
