এদের বিশ্বকাপ খেলাই উচিত না- আকরাম খান

এদের বিশ্বকাপ খেলাই উচিত না’আকরাম

ওয়ানডে ক্রিকেটকে বলা হতো টাইগারদের প্রিয় ফরম্যাট! আইসিসির পূর্ণ সব সদস্যকে এই ফর্মেটে হারিয়ে বৃত্ত পূরণ করেছি বাংলাদেশ। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও গর্ব করতেন ওযানডে নিয়ে! আইসিসির শর্ত পূরণ করেই ২০১৫, ২০১৯ ও ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সরাসরি কোয়ালিফাই করেছে। আর ২০১৫ থেকে লম্বা সময় ধরে আইসিসি ওডিআই র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ৭ নম্বরে। কিন্তু ২০২৩ বিশ্বকাপের পর থেকেই অবনমন হতে হতে এখন ১০ নম্বরে।


২০২৭ বিশ্বকাপে সরসরি কোয়ালিফাই করার স্বপ্ন এখন অনেকটাই ফিকে। সবশেষ দলটি আফগানিস্তান সিরিজে টানা দুই ম্যাচ হেরে কঠিন পরিক্ষার মুখোমুখি বাংলাদেশ। দলের র‌্যাংকিংয়ের সাথে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স এখন প্রশ্নবৃদ্ধ! সবশেষ ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ব্যাটিং ১৯১ রান তাড়া করতেও পারেনি মেহেদী হাসাস মিরাজের দল।


একের পর এক ব্যাটসম্যানের বাজে শট, নড়বড়ে টেকনিক, ব্যাখ্যাতীত রান আউট, ম্যাচ সচেতনতার দৃষ্টিকটূ ঘাটতি। সবকিছুর যোগফল বিব্রতকর ব্যাটিং ব্যর্থতা। সিরিজে সমতা ফেরানোর চ্যালেঞ্জে লড়াই করতেও পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮১ রানের জয়ে এক ম্যাচ বাকি রেখেই সিরিজ জিতে নিল আফগানিস্তান।


অথচ একসময় যে সংস্করণ ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তির জায়গা! সেটিই এখন নিয়মিত হতাশার উপলক্ষ। সবশেষ ১১ওয়ানডের ১০টি হারল তারা। সিরিজ হারের তেতো স্বাদ পেতে হলো টানা চার সিরিজে। অথচ টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেখানে টানা ৪টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেখানে ওডিআই সিরিজে বিপরীত চিত্র।

গত বছর হোমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-১ সিরিজ জয়ের পর টানা ৪টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোমে ২-১ এ হার, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ০-৩, শ্রীলঙ্কা সফরে ২-১, সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে আফগানিস্তানের কাছে ইতোমধ্যে ০-২। অথচ এই সফরেই আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টিতে ৩-০ তে হোয়াটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ।


কাকতালীয় হলেও সত্য, চলমান ওডিআই সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ দল হেরেছে আফগানিস্তানের দুই বোলারের কাছে। প্রথম ম্যাচে ওমরজাই-রশিদ খান নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে পেসার ওমরজাইয়ের ৩টি শিকারের পাশে লেগ স্পিনার রশিদ খানের ৫টি উইকেট।


এই অবস্থায় আগামী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সরাসরি খেলা অনিশ্চিত! কারণ স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাসহ র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা ৯টি দল বাছাইপর্বের বাধা ছাড়াই সরাসরি বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। ফলে বাংলাদেশের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো র‍্যাঙ্কিংয়ের নবম স্থানে উঠে আসা।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিততে জিতলে এরপর ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতলে সেই সুযোগ ছিল। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ হেরে এখন বিপদে বাংলাদেশ। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার বিকল্প থাকবে না বাংলাদেশের সামনে।

অন্যদিকে, ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত সিরিজের আগে এফটিপিতে বাংলাদেশের আর কোনো ওয়ানডে ম্যাচ নেই। মাঝে লম্বা সময় কেটে যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে। তাই এখনই র‍্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলতে না পারলে জটিল সমীকরণের মারপ্যাচে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।


বাংলাদেশ দলের এমন বাজে অবস্থা নিয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান চরম হতাশ! তার কথা এমন ব্যাটিং নিয়ে বিশ্বকাপে খেলাই উচিত না। ২০২৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের খেলার বিষয়ে জানতে চাইলে খেলা লাইভকে আকরাম বলেন,‘আফগানদের বিপক্ষে যেভাবে সিরিজ হেরেছে এই দলের বিশ্বকাপ খেলাই উচিত না। বিশ্বকাপে খেলতে হলে ব্যাটিংয়ে উন্নতি করতে হবে।’


ওয়ানডে দলের করুণ ব্যাটিং নিয়ে আকরাম আরও বলেন,‘ক্রিকেটাররা বিসিবি থেকে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা পেয়েও নিজেদের উন্নতি করতে পারছে না, এজন্য ক্রিকেটাররাই দায়ী। তাদের পরিবর্তনের কোন ইচ্ছা নেই। দ্বিতীয় ওয়ানডে ব্যাটাররা যেভাবে আউট হয়েছেন! তা দেখে আমি হতাশ! এদের বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাওয়া উচিত না!’


এই অবস্থা থেকে উন্নতির উপায় জানতে চাইলে আকরাম বলেন,‘আমাদের টপঅর্ডাররা ধারাবাহিক ব্যর্থ হচ্ছে! দেখেন আফগনিস্তানের এক ওপেনার ৯৫ রা করেছে। দলে এতো সুযোগ দেওয়ার পরই কবে শিখবে তারা? সব কিছু কোচ পরিবর্তন করে দিতে পারবে না! যদি না নিজের ইচ্ছা থাকে! তামিম-সাকিবরা যখন ক্রিকেট শুরু করেছিল! তখন এতো সুযোগ সুবিধা ছিল না। তারা নিজেরা চেষ্টা করেছে! কিন্তু এখন সুযোগ দেয়া হচ্ছে কিন্তু নিজেরা পরিবর্তন হচ্ছে না!

Exit mobile version