জুয়ায় হার, শেষমেষ উপায় না পেয়ে জার্সি চুরি!

মুম্বাইয়ের ঐতিহাসিক ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অবস্থিত ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) অফিস থেকে শতাধিক আইপিএল জার্সি চুরির ঘটনায় এক নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেপ্তার করেছে মুম্বাই পুলিশ। এই জার্সিগুলোর বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে ছয় লাখ রুপি বলে জানা গেছে। তথ্যটি উঠে এসেছে ক্রিকটেকারের একটি প্রতিবেদন থেকে।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম ফারুক আসলাম খান (৪৩)। মুম্বাইয়ের মিরা রোড এলাকার বাসিন্দা এই ব্যক্তি বিসিসিআইয়ের চার্চগেট অফিসের স্টোররুম থেকে মোট ২৬১টি জার্সি চুরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে জানা গেছে, তিনি এই জার্সিগুলো পরে হরিয়ানার এক অনলাইন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, নিয়মিত জুয়া খেলায় টাকা হারাতেন ফারুক। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই চুরির পথে নামেন তিনি। তদন্তকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হওয়া এক বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে কুরিয়ার মারফত তিনি পুরো চালানটি পাঠিয়ে দেন।

চুরির ঘটনা ঘটেছে গত ১৩ জুন। তবে বিষয়টি সামনে আসে স্টক অডিটে গুদামের হিসাব না মেলায়। বিসিসিআই তখন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দেখতে পায়, ফারুক স্টোররুম থেকে একটি বড় প্যাকেট হাতে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক স্বীকার করেছেন যে বিক্রির সময় দরদাম করেছিলেন, তবে ঠিক কত রুপিতে চালানটি দিয়েছেন, তা নিশ্চিত করে বলেননি। তার দাবি, সেই অর্থ অনলাইন জুয়ায় হারিয়ে ফেলেছেন।

যে হরিয়ানাভিত্তিক ব্যবসায়ীর কাছে এই জার্সিগুলো বিক্রি হয়, তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে পুলিশ। তিনি দাবি করেছেন, এই পণ্যের উৎস অবৈধ তা তিনি জানতেন না। তার ভাষ্য, “আমাকে বলা হয়েছিল, এগুলো স্টক ক্লিয়ারেন্সের অংশ।” এজন্যই নাকি তিনি সেটা রেখে দেয়।

চুরি হওয়া ২৬১টি জার্সির মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫০টির খোঁজ পাওয়া গেছে। বিসিসিআই ১৭ জুলাই মেরিন ড্রাইভ থানায় অভিযোগ দায়ের করে। বর্তমানে তদন্ত চলছে ফারুকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণের মাধ্যমে, যাতে পুরো অর্থ লেনদেনের চিত্র পরিষ্কার হয়।

ফারুকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির চুরি ও বিশ্বাসভঙ্গ সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এই ঘটনার মাধ্যমে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অভ্যন্তরীণ অডিট প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Exit mobile version