ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক উত্তেজনা শুধু কূটনৈতিক পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নয়, ক্রিকেটাঙ্গনেও এর প্রভাব পড়ে নিয়মিত। চলতি বছরের এশিয়া কাপ নিয়েও ছিল নানা জটিলতা। শেষ পর্যন্ত আসন্ন ৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসছে বহুল প্রতীক্ষিত এই টুর্নামেন্ট। তবে পাকিস্তানের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন এক দুশ্চিন্তা-এশিয়া কাপ হয়তো দেশটির টিভি দর্শকেরা দেখতে পারবেন না।
মূল সংকট সম্প্রচার স্বত্ব বা মিডিয়া রাইটস নিয়ে। ভারতীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান সনি ইন্ডিয়া পাকিস্তানে এশিয়া কাপ সম্প্রচারের জন্য দাবি করেছে ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই টাকায় পাকিস্তানের দর্শকেরা পুরুষ ও মহিলা উভয় দলের সব ম্যাচ দেখতে পারতেন। তবে পাকিস্তানের কোনো টিভি চ্যানেল এখনো এত বড় অঙ্কের বিনিয়োগে রাজি হয়নি। চ্যানেলগুলোর দাবি, দেশের বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এমন ব্যয় থেকে লাভবান হওয়া কঠিন।
উল্লেখ্য, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ইতোমধ্যে ২০২৪ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত আট বছরের মিডিয়া রাইটস ১৭০ মিলিয়ন ডলারে সনি ইন্ডিয়ার কাছে বিক্রি করেছে। এই চুক্তির আওতায় চারটি পুরুষ ও চারটি নারী এশিয়া কাপসহ মোট ১১৯টি ম্যাচের সম্প্রচার অধিকার রয়েছে। এর মধ্য থেকে পাকিস্তানের ভাগে ২৫% (প্রায় ৪২.৫ মিলিয়ন ডলার) আসার কথা, যদিও ডিজিটাল রাইটস আলাদাভাবে বিবেচিত হচ্ছে।
আয়ের বড় অংশ, প্রায় ৬৫%, ভারত থেকেই আসবে বলে মনে করছে এসিসি, যা এশিয়া কাপের বাণিজ্যিক মূল্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তান যদি ফাইনালে পৌঁছে যায়, তাহলে অন্তত তিনটি হাইভোল্টেজ ম্যাচ দেখা যাবে এই টুর্নামেন্টে। ক্রিকেট পাকিস্তান জানায়, এই বাণিজ্যিক সম্ভাবনার কারণেই সনি এত উচ্চমূল্য দাবি করছে।
তবে পাকিস্তানি চ্যানেলগুলোর জন্য এই মূল্য অনেক বড় চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই কারণে তারা সম্প্রচারের জন্য একটি কনসোর্টিয়াম গঠনের পরিকল্পনা করছে, যাতে খরচ ভাগ করে সনির দাবির কাছাকাছি যাওয়া যায়। এমন কনসোর্টিয়াম গঠনের উদ্যোগ ব্যর্থ হলে দর-কষাকষি আরও চলবে। পাকিস্তানি গণমাধ্যম জানাচ্ছে, তিনটি বড় টিভি চ্যানেল আলোচনায় আছে, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।
অন্যদিকে ডিজিটাল রাইটস পাকিস্তানে ইতোমধ্যে নির্ধারিত হয়েছে এবং সে বিষয়ে শিগগিরই ঘোষণা আসবে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ সম্প্রচারের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর রাষ্ট্রীয় টিভি কিছু লাভের মুখ দেখেছে। সেটি কিছুটা আশার আলো দেখালেও, এশিয়া কাপের মতো বড় আয়োজনে বিনিয়োগ এখনো বড় এক ঝুঁকি।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩
















