এশিয়া কাপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ৪১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে দেখা হয়েছিল ভারত-পাকিস্তানের। ঐতিহাসিক এই ফাইনাল নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের চোখ ছিল মরুর বুকে। কিন্তু রোমাঞ্চর এই ফাইনালে পাকিস্তানের ব্যাটাররা দারুণ শুরুর পরও ক্রিকেট ভক্তদের হতাশ করেছে। ফারহান-ফখরের উদ্বোধনী জুটি দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলাবলি হচ্ছিল, ভারতকে ২০০ রানের লক্ষ্য দেবে পাকিস্তান। কিন্তু ২০০ দূরে থাক! ১৫০ রানও করতে পারল না সালমানের আগা আলির দল। ইনিংসের ৫ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় ১৪৬ রানে।
দুবাইয়ে শিরোপার লড়াইয়ে টস হেরে ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরু পায় পাকিস্তান। এশিয়া কাপে বুমরাকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন ফারহান। কিন্তু ফাইনালে বুমরার ওপর চড়াও হয়ে পাকিস্তানি এই ওপেনার। ওভারের প্রথম বলে চারের পর তৃতীয় বলে ছক্কা মেরেছেন তিনি। চার ওভার শেষে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভার বোলিং করেন দুই স্পিনার। এই দুই ওভার থেকে ১৩ তুলে নেন ফারহান ও ফখর জামান। পাওয়ারপ্লেতে খুব বেশি রান তুলতে না পারলেও কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬ ওভারে ৪৫ রান তোলে। এবারের এশিয়া কাপে নিজেদের উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রান করে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে ৪৫ রানের জুটি পেরিয়ে ফাইনালে সাহিবজাদা ফারহানের ফিফটিতে ৯.৪ ওভারে ৮৪ রান তোলে।
এর মাঝে এশিয়া কাপে নিজের দ্বিতীয় ও আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন ফারহান। টুর্নামেন্টে তাঁর দুটি হাফ সেঞ্চুরিই ভারতের বিপক্ষে। কুলদীপ যাদবের ওভারের চতুর্থ বলে ২ রান নিয়ে ফিফটি পূরণ করেন ফারহান। তবে ফিফটির পর বেশি দূর এগোতে পারেনি এই ওপেনার। ৫৭ রানে বিদায় নেন তিনি। দশম ওভারে বরুণ চক্রবর্তীর তৃতীয় বলে ছক্কা মারার পর চতুর্থ বলেও বড় শট খেলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়েন তিলক বর্মার হাতে। ৩৮ বলে ৫ বাউন্ডারি ও তিন ছক্কায় এ রান করেন তিনি।
ফারহান আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েও ব্যর্থ সাইম আইয়ুব। কুলদীপের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে বুমরার হাতে ধরা পড়লেন তিনি। ১১ বলে করেন ১৪ রান। ১২.৫ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ তখন ২ উইকেট হারিয়ে ১১৩। মাত্র ২১ রান যোগ করতেই হারিয়েছে ৬ উইকেট। ফাইনালের চাপে মোমেন্টাম হারিয়ে ফিফটির আগেই ফিরে যান ফখর জামান। এই ওপেনার ৩৫ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ৪৬ রানে থামেন। বরুণের বলে চার মেরে ফিফটি পূরণ করতে চেয়েছিলেন পাকিস্তানের ওপেনার। কিন্তু ব্যাটের কিনারায় লেগে বল গেল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়ানো কুলদীপের হাতে।
ফখর জামানের হুসেইন তালাত ১, সালামান আগা (অধিনায়ক) ৮,শাহিন আফ্রিদি শূন্য, ফাহিম আশরাফ শূন্য ও হারিস রউফ ৬ রানে। ৯ বলে নাওয়াজ করেন ৬ রান। পাকিস্তানের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান ছাড়া আর কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্ক পর্যন্ত।
২০তম ওভারে প্রথম বলে পাকিস্তানের ইনিংসের ইতি টানেন জাসপ্রিত বুমরাহ। তার বলে মোহাম্মদ নওয়াজের ক্যাচ নেন রিঙ্কু সিং। ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার কুলদিপ যাদব। দুটি করে উইকেট নেন বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল ও বরুণ চক্রবর্তী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ১৯.১ ওভারে ১৪৬/১০ (ফারহান ৫৭, ফখর ৪৬, সাইম ১৪, হারিস ০, সালমান ৮, তালাত ১, নওয়াজ ৬, আফ্রিদি ০, ফাহিম ০, রউফ ৬, আবরার ১*; দুবে ৩-০-২৩-০, বুমরাহ ৩.১-০-২৫-২, বরুণ ৪-০-৩০-২, অক্ষর ৪-০-২৬-২, কুলদিপ ৪-০-৩০-৪, তিলক ১-০-৯-০)
