আবারও বিপিএল শিরোপা জয়ের খুব কাছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিপিএলের এবারের আসরে সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করল ভিক্টোরিয়ান্সরা। শুক্রবার প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারায় লিটন দাসের দল। রংপুরের দেয়া ১৮৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৯ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান তোল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
অবশ্য এখনও ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে রংপুরের। আগামী বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে জিততে হবে তাদের।
এর আগে মিরপুরে কুমিল্লার মুশফিক হাসানের বিব্রতকর রেকর্ডের মধ্য দিয়ে বড় স্কোর দাঁড় করায় রংপুর। এবারের বিপিএল দিয়েই পেশাদার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় এই পেসারের।
গ্রুপ পর্বে চারটি ম্যাচ খেলে খুব একটা খারাপও করেননি। তবে নকআউট পর্বে এসে স্নায়ুচাপ সামলাতে পারেননি এই পেসার। তাতে বিপিএলের সবচেয়ে খরুচে বোলারের অনাকাঙ্ক্ষিত এক রেকর্ড গড়ে ফেলেন ২১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। নিজের চতুর্থ ওভারে ২৮ রান নিয়ে চার ওভারে খবচ করেন ৭২ রান।
ফলে প্রথম কোয়ালিফায়ারে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান তোলে রংপুর রাইডার্স। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৯৭ রান করেন মারকুটে ব্যাটার নিউজিল্যান্ডের জেমি নিশাম। এ দিন ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনে দলটি। শামিম হোসেনকে প্রমোশন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যর্থ! ওপেন করতে নেমে ফ্লপ এই তরুণ ব্যাটার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ডাক খেয়ে সাজঘরে ফিরেন। সুবিধা করতে পারেননি আরেক ওপেনার রনি তালুকদারও। ১১ বলে ১৩ রান করেছেন তিনি।
দ্রুত দুই ওপেনার ফেরার পর বিদায় নেন সাকিব আল হাসান। তিনে নেমে ৯ বল খেলে মাত্র ৫ রান করেন এই অলরাউন্ডার। তখন ২৭ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে যখন ধুঁকছিল দল! ঠিক তখনই হাল ধরেন জিমি নিশাম। চতুর্থ উইকেটে শেখ মেহেদিকে সঙ্গে নিয়ে ৩৯ রানের জুটি গড়েন নিশাম। ২২ রান করে মেহেদি ফেরার পর ভাঙে সেই জুটি। আসরে প্রথম খেলতে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন নিকোলাস পুরাণ। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি।
এই ক্যারিবিয়ান হার্ডহিটারের ব্যাটে ৯ বলে ১৪ রান এসেছে। আর শেষদিকে ২৪ বলে ৩০ রানের ইনিংসে নিশামকে সঙ্গে দিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। নিশাম এদিন তার বিপিএল সেরা ইনিংস খেলেছেন। সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও অবশ্য মাইলফলক ছুঁতে পারেননি বল না থাকার কারণে। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৯৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন এই কিউই।
ফাইনাল নিশ্চিত করতে ১৮৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুতেই সুনীর নারাইনকে হারায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এরপর তাওহিদ হৃদয়কে সাথে নিয়ে মিরপুরে ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন লিটন দাস। দেশ সেরা দুই টি-২০ ব্যাটার নান্দনিক সব চার ছক্কার ইনিংস উপহার দিয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। অবশেষে দলীয় ১৪৩ রানে ভাঙে তাদের ১৪২ রানের জুটি। হৃদয় ৪৩ বলে ৫ বাউন্ডারি ও চার ছক্কায় ৬৪ রান করে আবু হায়দার রনির বলে সাকিবের তালুবন্দি।
দুই উইকেট হারিয়ে জনসন চার্লস জুটি দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন লিটন দাস। জয় পেতে ২৯ বলে কুমিল্লার প্রয়োজন ৪১ রান। তবে এরপর জনসন চার্লস ১০ রানে বিদায়ের পর বিদায় নেন লিটন দাস। দলের পক্ষে ৫৭ বলে ৯ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় ৮৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে মেহেদীর বলে ক্যাচ দেন। শেষ দিকে মঈন আলী ১২ ও আন্দ্রে রাসেল ২ রানে অপরাজিদ থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।