ক্রিকেট বিশ্বে পাক-ভারতের দ্বৈরথের খবর কে না জানে? আর মাঠের লড়াই ছাপিয়ে এটি যে দুই দেশের রাজনীতিতেও বড় নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে সে খবরও বহু পুরোনো। তবে এক্ষেত্রে যোজন যোজন দূরে অবস্থান পাকিস্তানের। বলা চলে নিতান্তই শিশু। সর্বশেষ আইসিসির কাছে নালিশ করার পরে বিশ্বকাপের জন্য ভিসা মিললো পাকিস্তান ক্রিকেট দলের।
আগামী পাঁচ অক্টোবর শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপের ময়দানী লড়াই। তাঁর আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে ওয়ার্ম আপ ম্যাচে মাঠে নামবে দলগুলো। বিশ্বকাপে বরাবরের ফেভারিট পাকিস্তান তাঁদের প্রথম ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলবে ২৯ সেপ্টেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। কিন্তু হায়দারাবাদের এই ম্যাচটিকে আমলে নেয়ার বদলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)-কে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে ভিসা কূটনীতিতে। যেটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হওয়ার কথা ছিলো, হয়তো হয়েও যেতো। কিন্তু আইসিসির কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরেই ভিসা মিললো বাবর আজমদের।
অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে এক পাঠানো বিবৃতিতে পিসিবি জানিয়েছে, এই বিষয়গুলো নিয়ে তাঁরা তিনবছর ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের কেউই যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না। ভিসা না পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে তাঁরা দুইদিন দুবাইয়ে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। কিন্তু আইসিসির কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরে তাঁদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভিসাপ্রাপ্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছিলো। বিলম্বে ভিসা প্রাপ্তির কারনে দুবাই অবস্থানের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন বাবররা। তবে অবস্থান না করলেও বুধবার সকালে দুবাই হয়েই হায়দারাবাদে পৌছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিম পাকিস্তান।
দুই দেশের মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্কের প্রভাব ক্রিকেটে বারবার পড়েছে। গত ১০ বছর ধরে দুই দলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তান যায়নি ভারত। পাকিস্তানও পাল্টা জানিয়েছিলো বিশ্বকাপ খেলতে ভারতের মাটিতে আসবে না তাঁরা। পরে অবশ্য আইসিসির শাস্তি ও আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় সিদ্ধান্ত বদলানো হয়। পাকিস্তান সরকার শেষমেষ অনুমতি দিয়ে দেয়। তবে দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ককে উন্নতি করতে চেষ্টায় কোনো কমতি রাখছে না পিসিবি ও বিসিসিআই। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে পাকিস্তান গিয়েছিলেন বিসিসিআই কর্তারা। সেখানে গিয়ে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছিলেন।
সর্বশেষ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিষয়টি যে পাকিস্তান ভালোভাবে নেয়নি তা কি পাকিস্তানকে তাঁতিয়ে দেবে নাকি বাবরদের মনোবল ভেঙে দিবে তা হয়তো মাঠের লড়াই শুরু হওয়ার পরেই বোঝা যাবে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট যে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে ক্রিকেট রাজনীতিতে ভারতের কাছে বারবার নাস্তানাবুদ হচ্ছে পাকিস্তান।