বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অঘটন ঘটালেও নিউজিল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পেল না আফগানিস্তান। ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে আফগানরা। আর টানা চার ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এলো নিউজিল্যান্ড।
প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৮৮ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৩৪ ওভার ৪ বলে মাত্র ১৩৯ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
চেন্নাইয়ে টস জিতে প্রথমে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আফগানিস্তান। শুরুটা অবশ্য খুব একটা ভালো হয়নি কিউইদের। দলীয় ৩০ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। ২০ রানে আউট হয়েছেন ডেভন কনওয়ে। এরপর নিউজিল্যান্ডের ইংনিংসকে টেনে নিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়ং। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৯ রান যোগ করেন তারা। ৩২ রানে আউট হয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র। তার বিদায়ের পর এক রানের ব্যবধানে ফিরে গেছেন উইল ইয়ংও। হাফ সেঞ্চুরি করার পর ৫৪ রানে আউট হয়েছেন তিনি। এক রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। সাত বল খেলে ১ রান করে ফিরে যান ড্যারিল মিচেল। নিউজিল্যান্ডের এই বিপদ সামলে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছেন টম লাথাম ও গ্লেন ফিলিপস। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৪৪ রান যোগ করেন তারা। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন দু’জনই। তবে গ্লেন ফিলিপসের বিদায়ের পর দ্রুতই ফিরে যান টম লাথামও। দলীয় ২৫৪ রানে ৭১ রান করে আউট হয়েছেন ফিলিপস। আর দলীয় ২৫৫ রানে আউট হয়েছেন টম লাথাম। ৬৮ রান করেন তিনি। শেষ দিকে মার্ক চাপম্যানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে ২৮৮ রান করে নিউজিল্যান্ড। চাপম্যান ১২ বলে ২৫ রান করেন। আফগানিস্তানের নাভিন ও আজমতউল্লাহ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
২৮৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে নিউজিল্যান্ডের বোলিংয়ের সামনে খেই হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তানের ব্যাটাররা। ৪৩ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারায় তারা। দলীয় ২৭ রানে আউট হয়েছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন হাসমতউল্লাহ শাহিদী। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৫৪ রান করে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন রহমত শাহ ও আজমতউল্লাহ উমরজাই। কিন্তু দলীয় ৯৭ রানে এই জুটি ভাঙার পর আর দাঁড়াতেই পারেনি আফগানিস্তান। আজমতউল্লাহ ২৭ ও রহমত ৩৬ রান করেন। এরপর ইকরাম ১৯ রানে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলের ব্যাটারদের আসা যাওয়া দেখেছেন। আর কেউই দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেন নি। ৩৪ ওভার ৪ বলে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। নিউজিল্যান্ডের মিচেল সান্তনার ও লুকি ফার্গুসন ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। ২ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট।
ওমরজাই’র জোড়া আঘাতের ৩ বল পর আবারও আফগানিস্তানকে সাফল্য এনে দেন স্পিনার রশিদ খান। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত ৮৯ রান করা ড্যারিল মিচেলকে ১ রানে আটকে দেন রশিদ।
১১০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। এ অবস্থা থেকে দলকে উদ্ধার করেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম লাথাম ও গেøন ফিলিপস। পঞ্চম উইকেটে জুটি বেঁধে আফগানিস্তানের বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ৪৩তম ওভারে দলের রান ২শতে নেন লাথাম-ফিলিপস।
ঐ ওভারেই ৬৯ বলে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় অর্ধশতক করেন ফিলিপস। ৪৬তম ওভারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ৬৭ বল খেলা লাথাম।
৪৮তম ওভারে একত্রে লাথাম-ফিলিপসকে শিকার করেন পেসার নাভিন উল হক। প্রথম বলে ফিলিপসকে ও তৃতীয় ডেলিভারিতে লাথামকে আউট করেন নাভিন। ৪টি করে চার-ছক্কায় ৮০ বলে ৭১ রান করেন ফিলিপস। ৭৪ বল খেলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৮ রানের ইনিংস সাজান লাথাম। পঞ্চম উইকেটে ১৫৩ বলে ১৪৪ রানের জুটি গড়ে দলের রান আড়াইশ পার করেন লাথাম-ফিলিপস জুটি।
দলীয় ২৫৫ রানের মধ্যে লাথাম ও ফিলিপসের বিদায়ের পর ডেথ ওভারে ঝড় তুলেন মার্ক চাপম্যান। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২ বলে ২৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। ৫ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন মিচেল স্যান্টনার। এতে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৮৮ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। লাথাম-ফিলিপসের দারুন জুটির পর চাপম্যানের ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে শেষ ১০ ওভারে ১০৩ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড।
আফগানিস্তানের নাভিন ৪৮ রানে ও ওমরজাই ৫৬ রানে ২টি করে উইকেট নেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন মুজিব ও রশিদ।