অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা মনে করেন, খেলাধুলায় ক্রমবর্ধমান জুয়ার বিজ্ঞাপন তরুণ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। খাজা ভারত সরকারের অনলাইন গেমিং বিল ২০২৫–এর উদাহরণ টেনে বলেন, যেভাবে সেখানে জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়াতেও তেমন কঠোর ব্যবস্থা জরুরি।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে জুয়া নিয়ে একটি সংসদীয় তদন্ত প্রতিবেদন—“ইউ উইন সাম, ইউ লুজ মোর”। এতে জুয়ার সমস্যা বাড়তে থাকা জনস্বাস্থ্য সংকট হিসেবে চিহ্নিত করে ৩১টি সংস্কারমূলক সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে ছিল জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন, বাজি কোম্পানির ওপর কর আরোপ, প্রলোভনমূলক অফার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা, ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য সুরক্ষা জোরদার, গবেষণায় অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম।
এবিসি পডকাস্টে খাজা বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মকে সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু বাস্তবে যা ঘটছে, সেটি উল্টো। আমি যখন এনআরএলের ম্যাচ দেখি, প্রতিবারই খেলা শুরু হওয়ার আগে জুয়ার বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। প্রতিবারই বলা হয় কোন দলের জেতার সম্ভাবনা কত।”
তার মতে, এখন অনেক কিশোর বয়সেই বেটিংয়ে জড়িয়ে পড়ছে। “১৫–১৬ বছর বয়সেই অনেকের নিজের বেটিং অ্যাকাউন্ট থাকে। তারা ভাবে খেলা উপভোগ মানেই বাজি ধরা। খেলাধুলা আর জুয়া যেন একাকার হয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি শিশুদের সামনে শুধু জুয়ার দিকটা তুলে ধরি, কিন্তু এর ভয়াবহ পরিণতি না দেখাই—তাহলে সেটা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়াবে।”
খাজা জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে আলোচনা করার পরিকল্পনা করছেন। একইসঙ্গে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সংসদীয় প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য।
তার ভাষায়, “আমি চাই খেলাধুলায় জুয়ার প্রভাব ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা হোক। বিশেষ করে বিজ্ঞাপন যেন আর না থাকে। খেলোয়াড়, আয়োজক আর সরকার—সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে, তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।”
