চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ডিপিএলে বিতর্কিত আউট নিয়ে তোলপাড় দেশের ক্রীড়া অঙ্গন। গত বুধবার ৯ এপ্রিল গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুরের মধ্যকার ম্যাচে দুইটি আউট বিতর্কের জন্ম দেয়। যা নিয়ে ক্রিকেট ভক্তরাও বিরক্ত! এমন আউট দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সাবেক ওপেনার ইমরুল কায়েস।
মিরপুরে ডিপিএলের ৫৭তম ম্যাচে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব আগে ব্যাট করে ৪১ ওভারে ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে ব্যাট করছিল শাইনপুকুর। ১৪৪ রানে ৯ উইকেট হারানো দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন শেষ ব্যাটার শরিফুল ইসলাম সৈকত।
তার সঙ্গী উইকেটকিপার সাব্বির। ৪৪তম ওভারের প্রথম বলেই স্টাম্পিংয়ের শিকার হন সাব্বির। শাইনপুকুর অলআউট হয়েছে ১৭৩ রানে। গুলশান পেয়েছে ৫ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয়।
কিন্তু শাইনপুকুরের শেষ ব্যাটার হিসেবে সাব্বির যেভাবে আউট হয়েছেন তা হজম করা কঠিন। তার স্টাম্পিং হওয়ার ধরণ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বলতে গেলে ইচ্ছাকৃতভাবে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন এই ব্যাটার। ফলে অনেকেই খুঁজে পাচ্ছেন ভিন্ন কিছুর গন্ধ।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ইমন স্টাম্পের বেলস ফেলে দেয়ার আগেই ব্যাট পপিং ক্রিজের দাগের ভেতরে রাখার সুযোগ এসেছিল তার সামনে। সে চেষ্টাও করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কী ভেবে যেন দাগের বাইরেই ব্যাট রাখলেন।
মাঠের আম্পায়ার সিদ্ধান্তের জন্য থার্ড আম্পায়ারের শরণাপন্ন হলে রিপ্লে দেখে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন সবাই। সাব্বিরের এমন আউটের ধরন নিয়ে নিজের ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ উগড়ে দেন বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস।
নিজের ফেসবুকে কায়েস লেখেন, ‘আসসালামুয়ালাইকুম,আজকে আমি হৃদয় থেকে ক্ষোভ নিয়ে কিছু কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। মিডিয়া, ক্রিকেটার, সাংবাদিক, ধারাভাষ্যকার—সবাই আজ একটা ঘটনায় স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ। কারণটা খুব পরিষ্কার—ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ যে কাজটা হয়েছে, সেটা শুধু লজ্জাজনক না, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছে।
একটা দলকে সুপার লিগে উঠতে না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আরেক মাঠে দুই দল নিজেদের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে! এটা কী ধরনের নাটক? আজকের সেই ম্যাচের ভিডিও প্রমাণসহ নিচে রয়েছে—আপনারা নিজেরাই দেখুন, বিচার করুন।
এই যদি হয় আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবস্থা, তাহলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলে কারা খেলবে? কাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি দেশের পতাকা? যারা মাঠে নামার আগেই ম্যাচের ফয়সালা করে নেয়, তাদের দিয়ে কী দেশের প্রতিনিধিত্ব হয়? লজ্জা!
যাদের ব্যবহার করে এসব নোংরা খেলা খেলানো হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, কারণ ওরা আজ নিজেরাই নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছে।
আমরা যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে দিনরাত খেটে যাচ্ছি—আর কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ নিজেদের স্বার্থে গোটা দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করছে উন্নতির, কিন্তু এইসব ঘটনাগুলো সেই চেষ্টাকেও মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে।
আমি জোরালোভাবে দাবি জানাই—এদের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এই কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত আজকের ম্যাচ বাতিল করে পুনরায় রিশিডিউল করা উচিত।