ফয়সালাবাদের ইকবাল স্টেডিয়ামেই হয়েছে সিরিজের ফয়সালা। দীর্ঘ ১৭ বছর পর এই ভেন্যুতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে এবার। পুরো ওয়ানডে সিরিজটাই এখানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছে স্বাগতিক পাকিস্তান। সেই সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে তারা। অধিনায়ক হিসেবে শাহীন শাহ আফ্রিদিও শুরু করেছেন দারুনভাবে। আজ সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মূলত বোলিং দাপট দেখিয়েই ৭ উইকেটে প্রোটিয়াদের উড়িয়ে দেয় পাকিস্তান। মাত্র ৩৭ রানে ৮ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রথম ওয়ানডে পাকিস্তান এবং দ্বিতীয়টি দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে ১-১ সমতা ছিল। শনিবার তাই সিরিজ জয়ের ফয়সালা হওয়ার ম্যাচে মুখোমুখি হয় দু’দল। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুন সূচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। উদ্বোধনী জুটিতে কুইন্টন ডি কক আর লুয়ান-ড্রে প্রিটোরিয়াস ৭২ রান যোগ করেন মাত্র ১৪.২ ওভারে। ৪৫ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ রানে বিদায় নেন প্রিটোরিয়াস। এরপরই বিস্ময়কর ধস নামে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপে।
একপ্রান্ত ধরে রেখে দুর্দান্ত ব্যাট করছিলেন ডি কক। অবসর ভেঙ্গে ফিরে এই সিরিজে আগের দুই ম্যাচে তিনি একটি হাফ সেঞ্চুরি ও আরেকটি সেঞ্চুরি করেছেন। এবারও তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন। তবে ৭০ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে তিনি মোহাম্মদ নাওয়াজের স্পিনে ৫৩ রানে আউট হওয়ার পর ভেঙ্গে পরে প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানের স্পিনাররা রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করেন।
সালমান আলী আগার অনিয়মিত অফস্পিন, আবরার আহমেদের লেগস্পিন আর নাওয়াজের বাঁহাতি স্পিনে দূর্বিপাকে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। ২ উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান থেকে ১৪৩ রান করতেই গুটিয়ে যায় বিপর্যস্ত সফরকারী দল। অর্থাৎ মাত্র ৩৭ রানে শেষ ৮টি উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
৩৭.৫ ওভারে ১৪৩ রানে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেন আবরার। এর আগে মাত্র একবার ওয়ানডেতে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ৩৩ রান খরচায়। তরুন এ লেগি এবার ১০ ওভারে ১ মেডেন দিয়ে ২৭ রানে দখল করেন ৪ উইকেট। সালমান আগা ৪ ওভারে ১৮, শাহীন আফ্রিদি ৪.৫ ওভারে ১৮ ও নাওয়াজ ৯ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ২টি করে উইকেট নেন।
মাত্র ১৪৪ রানের টার্গেটে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ফখর জামানের উইকেট হারায় পাকিস্তান। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শুন্য রানে সাজঘরে ফিরলেন এই ওপেনার। কিন্তু এরপর বাবর আজমকে নিয়ে ৬৫ রানের জুটি গড়েন ফর্মে থাকা সাইম আইয়ুব। যদিও আবার বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বাবর, রানআউট হয়ে যান ৩২ বলে ৫ চারে ২৭ করে। তৃতীয় উইকেটে আরও ৬৫ রানের জুটি আসে সাইম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটিংয়ে।
দলকে জয় থেকে মাত্র ১৪ রান দূরে রেখে সাইম আউট হন। তিনি মাত্র ৭০ বলে ১১ চার, ১ ছয়ে ৭৭ রান করেন। রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৪৫ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ৩২ রানে। মাত্র ২৫.১ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৪ রান করে জয় ছিনিয়ে নেয় পাকিস্তান। নান্দ্রে বার্গার ও বিয়র্ন ফরটুইন ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস– ১৪৩/১০; ৩৭.৫ ওভার (ডি কক ৫৩, প্রিটোরিয়াস ৩৯, ব্রিটজকে ১৬; আবরার ৪/২৭, সালমান ২/১৮, শাহীন ২/১৮, নাওয়াজ ২/৩১)।
পাকিস্তান ইনিংস- ১৪৪/৩; ২৫.১ ওভার (সাইম ৭৭, রিজওয়ান ৩২*, বাবর ২৭; বার্গার ১/২৯, ফরটুইন ১/৩৪)।
ফলঃ পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচঃ আবরার আহমেদ (পাকিস্তান)।
সিরিজঃ ৩ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
প্লেয়ার অব দ্য সিরিজঃ কুইন্টন ডি কক (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
