টেস্টের পর এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামছে টাইগাররা। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি চট্টগ্রাম বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু আজ সন্ধ্যা ৬টায়। সফরকারীদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০তে জয়ে পর টি-টোয়েন্টি জয় দিয়ে শুরু করতে চায় বাংলাদেশ।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে এই সিরিজকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে দুই দলই। কন্ডিশন, কম্বিনেশন, ব্যাটিং অর্ডার ও দলের পরিকল্পনা পরীক্ষা করার আদর্শ সময় হিসেবে দেখা হচ্ছে এই সিরিজকে। তাই শুরু থেকেই জমে উঠবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, এমনটাই আশা ক্রিকেটপ্রেমীদের।
বাংলাদেশ দল সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দারুণ ছন্দে রয়েছে। যদিও সবশেষ সিরিজে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে লিটন দাসের দল। তবে সেই ব্যর্থতা ভুলে আইরিশদের বিপক্ষে জ্বলে উঠতে চায় টিম বাংলাদেশ। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে লিটন কাল বুধবার বলেন,‘ গত সিরিজে আমরা ভালো করতে পারিনি। বেশি কিছু ভলের কারণে আমরা হেরেছি। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই।’
ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে হারলেও দলের তরুণ ব্যাটারদের উত্থান এবং বোলারদের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দলকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে দলে পরিবর্তন এনেছে বাংরাদেশ। শামিম ও তাসকিনের পরিবর্তে স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন আহমেদ ও উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেলেন অঙ্কন। দরুণ ছন্দে থাকা সাইফ হাসানকে টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। এছাড়া ওপেনার তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন রয়েছে দুর্দান্ত ফর্মে। আর লিটনের আক্রমণাত্মক স্ট্রোক খেলা পাওয়ার প্লেতে রানের গতি বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তিনে তৌহিদ হৃদয়, যিনি সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন, সেই ধার বজায় রাখতে চাইবেন। এখন পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে পাঁচটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। আর হেরেছে দুটি একটি পরিত্যক্ত।
অন্যদিকে বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড দলও সিরিজটি গুরুত্বের সঙ্গে খেলতে নামছে। সাব-কন্টিনেন্ট কন্ডিশনে নিজেদের পারফরম্যান্স উন্নত করা তাদের প্রধান লক্ষ্য। ব্যাটিংয়ে পল স্টার্লিং, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার ও অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে কেন্দ্র করেই পরিকল্পনা সাজিয়েছে দলটি। বিশেষ করে স্টার্লিং যদি শুরুতে আক্রমণে নামতে পারেন, বাংলাদেশের বোলারদের জন্য চাপ তৈরি হতে পারে।
বোলিংয়ে মার্ক আডায়ার, জর্জ ডকরেল ও ক্রেইগ ইয়ং নেতৃত্ব দেবেন। চট্টগ্রামের উইকেট সাধারণত ব্যাটিং-বান্ধব হলেও শুরুতে পেসাররা সাহায্য পেতে পারেন। স্লোয়ার ও ভ্যারিয়েশন ব্যবহারেই সাফল্যের চাবিকাঠি খুঁজছে আয়ারল্যান্ড। চট্টগ্রামের উইকেট সবসময় রান সমৃদ্ধ থাকে। ব্যাটসম্যানদের জন্য আদর্শ কন্ডিশন থাকায় বড় রানের ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শিশির পড়ার কারণে রাতের দিকে বোলারদের জন্য কাজ কঠিন হতে পারে। তাই টস জিতে বোলিং নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
দুই দলের সাম্প্রতিক মুখোমুখি পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ যে কোনো সময় ঘুরে যেতে পারে। তাই শুরু থেকেই সতর্ক ও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাইবে টাইগাররা।
সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শুরু হতে যাওয়া এই সিরিজটি দুই দলের জন্যই বড় পরীক্ষা। বাংলাদেশ চাইবে জয় দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগোতে, আর আয়ারল্যান্ড চাইবে চমক দেখিয়ে প্রতিযোগিতা জমিয়ে তুলতে।
বাংলাদেশ: লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), সাইফ হাসান (সহ-অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, কাজী নুরুল হাসান সোহান, মাহিদুল ইসলাম, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর হাসান, তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও সাইফউদ্দিন।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩



















