লো স্কোরিং হলেও বিশ্বকাপে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ জমেছিল দারুণ। অস্ট্রেলিয়াকে ১৯৯ রানে আটকে দিলেও তিন ব্যাটারকে শুন্য রানে হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়েছিল ভারত। তবে বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের ১৬৫ রানের জুটিতে দারুণ জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। ৬ উইকেটে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে ভারত।
চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। কোন রান না করেই বুমরাহ’র বলে আউট হয়েছেন মিচেল মার্শ। এরপর ভারতের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও তিন নম্বরে খেলতে নামা স্মিথ। রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান ডেভিড ওয়ার্নার। ম্যাচের সপ্তম ওভারের চার মেরে বিশ্বকাপে দ্রুততম ১ হাজার রানের রেকর্ড গড়েন ওয়ার্নার। বিশ্বকাপে ১৯ ইনিংসে ১ হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। ২০ ইনিংস খেলে বিশ্বকাপে ১ হাজার রান করেছিলেন শচিন টেন্ডুলকার ও এবিডি ভিলিয়ার্স।
তবে ৪১ রানে আউট হয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। স্মিথের সাথে ৮৫ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়েন ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে এটিই ছিল সর্বোচ্চ রানের জুটি। ওয়ার্নার ফেরার পর মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে আবারও জুটি গড়ার চেষ্টা করেন স্মিথ। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি করার আগেই ফিরে যান স্মিথ। ৪৬ রান করেন তিনি। এরপর আর লম্বা সময় কেউ ব্যাট করতে পারেন নি। দলীয় ১১৯ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় অজিরা। লাবুশেন ২৭ রানে ও অ্যালেক্স ক্যারে কোন রান না করেই আউট হয়েছেন।
ভারতীয় স্পিন সামলাতেই হিমশিম খেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১৫ রানের বেশি যেতে পারেন নি। ১৫ রান করেছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও। শেষ দিকে একাই লড়াই চালিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে দু’শো পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেন নি। স্টার্ক ২৮ রানে আউট হলে তিন বল বাকি থাকতেই ১৯৯ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের জাদেজা ৩টি এবং বুমরাহ ও কুলদিপ নেন ২টি করে উইকেট।
অল্প রানের টার্গেট দিয়েও শুরুতে লড়াই জমিয়ে তুলে অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ২ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান কোন রান না করেই আউট হয়েছেন। ইনিংসের চতুর্থ বলে ইশান কিশান রানের খাতা খোলার আগেই তাকে সাজঘরে ফেরান মিচেল স্টার্ক। পরেই ওভারেই উইকেট দিয়ে এসেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। হ্যাজলউডও তাকে খালি হাতে বিদায় করেছেন। বিপদে পড়া ভারতের আরও বিপদ বাড়িয়েছেন স্রেয়াশ আয়ার। তিনিও রানের খাতা খোলার আগে ঐ ওভারেই হ্যাজলউডের শিকার হয়েছেন।
তবে ভারতের ব্যাটিংয়ের পরের গল্পটা একেবারেই অন্যরকম। যে অন্ধকার মেঘ ছিল ভারতের আকাশে তা আস্তে আস্তেই কেটে গেছে বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের ব্যাটিংয়ে। অজি বোলাররা যেখানে আনন্দের মাঝে ছিলেন তারাই আবার হতাশায় ডুবেছেন। তবে দলীয় ২০ রানে বিরাট কোহলির ক্যাচ ফেলে দেয়ার খেসারত দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কোহলি ও রাহুল দু’জনই হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তবে বিরাট কোহলি ৮৫ রানে আউট হলে শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙে ১৬৫ রানে। ভারত তখন জয় থেকে মাত্র ৩৩ রান দূরে। আর কোন উইকেট না হারিয়েই ৫২ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় ভারত। তবে আফসোস থেকে যাবে রাহুলের। ম্যাচ জিতে যাওয়ায় মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন তিনি। ৯৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। হার্দিক পান্ডিয়া করেন ১১ রান।
স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১৯৯ (ওয়ার্নার ৪১, স্মিথ ৪৬। রবিন্দ্র জাদেজা ২৮/৩, বুমরা ৩৫/২, কুলদীপ যাদব ৪২/২) ও ভারত ২০১/৪ (৪১.২ ওভার), বিরাট ৮৫ ও রাহুল ৯৭*