রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে নাটকীয় হার উইন্ডিজের

নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা জয়টাকে হাতের মুঠোয় এনে দেন

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জয়টা হাতের মুঠোতেই ছিল নিউজিল্যান্ডের। কারণ ২০৮ রানের টার্গেটে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ৯৩ রানেই ৬ উইকেট হারায়। কিন্তু শেষদিকে রোভম্যান পাওয়েল, রোমারিও শেফার্ড ও ম্যাথু ফোর্ড অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে উল্টো ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই জয় পেয়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ ওভারে প্রয়োজনীয় ১৬ রান আর তুলতে পারেনি তারা। শেষের ২ বলে ৬ রান করতে না পেরে নাটকীয়ভাবে উইন্ডিজ হেরেছে ৩ রানে। আজ অকল্যান্ডে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টি জিতে নিউজিল্যান্ড এনেছে ১-১ সমতা।

কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ সফরে স্বাগতিকদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে উজ্জীবিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই জয় তুলে নেয়। আজ (বৃহস্পতিবার) দ্বিতীয় ম্যাচে তাই কিউইদের জিততেই হতো সিরিজ বাঁচাতে হলে। সেই ম্যাচের উভয় ইনিংসেই শেষদিকে হয়েছে অবিশ্বাস্য কিছুর মঞ্চায়ন।

টস হেরে নিউজিল্যান্ড আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩ ওভারে ২ উইকেটে ১০৭ রান করে। সেখান থেকে বাকি ৩ উইকেট হারিয়ে আরও ১০০ রান যোগ করে বড় সংগ্রহ পায় কিউইরা। এর পেছনে মূলত মার্ক চ্যাপম্যানের ২৮ বলে ৭৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস মূল ভূমিকা রেখেছে। এই মিডলঅর্ডার রীতিমতো টর্নেডো গতিতে ব্যাট চালিয়ে মাত্র ২৮ বলে ৬ চার ও ৭ ছক্কায় ৭৮ রান করেন।

মাত্র ২৮ বলে ৭৮ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন

অবশ্য চ্যাপম্যান ৪২ রানে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছেন উইকেরক্ষক শাই হোপ তা মিস করায়। তাই আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন এই ব্যাটার এবং কিউইদের শেষ ৫ ওভারে এনে দেন ৬৭ রান। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে উল্লেখযোগ্য বলতে আর ছিল ওপেনার টিম রবিনসনের ২৫ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে করা ৩৯ এবং ড্যারিল মিচেলের ১৪ বলে ২ চার, ১ ছয়ে করা অপরাজিত ২৮ রান।

পুরো ম্যাচে উইন্ডিজ ফিল্ডাররা ৫টি ক্যাচ ছেড়েছেন। তাই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৭ রান করে নিউজিল্যান্ড। রোস্টন চেজ ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ম্যাথু ফোর্ড, জ্যাসন হোল্ডার ও রোমারিও শেফার্ড ১টি করে উইকেট নেন।

এরপর ক্যারিবিয়রা জয়ের লক্ষ্যে নেমে এলোমেলো হয়ে গেছে। যদিও ইনিংসের তৃতীয় বলে ব্র্যান্ডন কিংয়ের (০) উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ৪৯ রানের জুটি হয়। কিন্তু আলিক অ্যাথানেজ ২৫ বলে ২ চার, ৩ ছয়ে ৩৩ রানে বিদায়ের পর ধস নামে। দুই স্পিনার ইশ সোধি ও মিচেল স্যান্টনারের তোপে এক সময় ১২.৫ ওভারে ৯৩ রানেই ৬ উইকেট হারায় তারা। তখন মনে হয়েছে নিউজিল্যান্ডের জয় সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এরপরই রোভম্যান, শেফার্ড ও ফোর্ড ঝড় তোলেন। ফলে শেষ ৫ ওভারে ওঠে ৮৭ রান, যা রান তাড়ার ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড। এর আগে টার্গেটে নেমে শেষ ৫ ওভারে ৮৬ রান ছিল সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালে ইংল্যান্ড সেটি করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট জর্জেসে।

রোভম্যান পাওয়েল ও রোমারিও শেফার্ড মাত্র ২৪ বলে ৬২ রানের জুটি গড়েন সপ্তম উইকেটে

রোভম্যান ১৬ বলে ১ চার, ৬ ছক্কায় ৪৫ রানে শেষ ওভারে আউট হন। তখনও ২ বলে মাত্র ৬ রানের দরকার ছিল। কিন্তু কাইল জেমিসনের করা ওই ওভারের প্রথম ৩ বলে ১০ রান হলেও পরবর্তী ৩ বলে একটি উইকেট হারানোর পাশাপাশি ২ রানের বেশি করতে পারেনি উইন্ডিজ ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৪ রান করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শেফার্ড ১৬ বলে ১ চার, ৪ ছক্কায় ৩৪ রান করে আউট হন। আর ফোর্ড ১৩ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ইশ সোধি ও মিচেল স্যান্টনার ৩টি করে উইকেট নেন।

Exit mobile version