উইন্ডহকের আকাশে শনিবার রাতে লিখে গেল এক অনন্য অধ্যায়। এই রাতে ইতিহাস গড়ল নামিবিয়া! শেষ বলের রোমাঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ক্রিকেটবিশ্বে রীতিমতো চমক সৃষ্টি করল জেরার্ড এরাসমাসের দল।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য নামিবিয়ার দরকার ছিল ১১ রান। আন্দিলে সিমেলানের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ কমান ইয়ান গ্রিন। এরপর পরের চার বল থেকে নেন চার রান, ফলে শেষ বলে দরকার মাত্র এক রান। আর সেই ডেলিভারিতেই মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন গ্রিন— মাঠে তখন বাঁধনহারা উদ্যাপন, ইতিহাসের সাক্ষী উইন্ডহক।
টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নামিবিয়ার এটাই প্রথম মুখোমুখি লড়াই, আর সেই ম্যাচেই ৪ উইকেটে জয় তুলে নিল আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশটি। প্রোটিয়াদের মতো শক্তিশালী দলকে মাত্র ১৩৪ রানে থামিয়ে শেষ বলে রুদ্ধশ্বাস জয়— এমন গল্প হয়তো নামিবিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে বহুদিন বলা হবে।
এর আগে আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে তিনটি জয় পেয়েছিল নামিবিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে এবার তাদের নাম উঠল চতুর্থবারের মতো সেই কীর্তির তালিকায়। অন্যদিকে প্রোটিয়াদের জন্য এটি লজ্জার এক পরিসংখ্যান— ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে হারার পর এটি তাদের দ্বিতীয়বার কোনো সহযোগী দেশের বিপক্ষে পরাজয়।
যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা এই ম্যাচে ‘বি’ দল পাঠিয়েছিল, তবু কুইন্টন ডি কক, লুয়ান-দ্রে প্রিটোরিয়াস, জেরাল্ড কোয়েটজি আর ন্যান্দ্রে বার্গারের মতো আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররাও ছিলেন দলে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৩৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি তারা; জেসন স্মিথ করেন সর্বোচ্চ ৩১ রান। নামিবিয়ার হয়ে রুবেন ট্রাম্পেলম্যান ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন সবচেয়ে সফল বোলার।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব ভালো হয়নি নামিবিয়ার। তবে অধিনায়ক গেরহার্ড এরাসমাস ও উইকেটকিপার-ব্যাটার ইয়ান গ্রিন ধীরে ধীরে ইনিংসকে গুছিয়ে নেন। ম্যাচ যখন পুরোপুরি উত্তেজনার চূড়ায়, তখন এক প্রান্তে অবিচল থাকেন ট্রাম্পেলম্যান। আর শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে ইতিহাস রচনা করেন গ্রিন— অপরাজিত ৩০ রানে মাঠ ছাড়েন তিনি।
উইন্ডহকের সেই রাত এখন নামিবিয়ার ক্রিকেটের গর্বের প্রতীক— যেখানে এক অসম্ভবকে সম্ভব করে দিল ছোট্ট একটি দল, এক অদম্য বিশ্বাসে।
