বিস্ফোরক ইনিংসে নতুন ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশের তরুণ ব্যাটার হাবিবুর রহমান সোহান। এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল রাইজিং স্টার্স টুর্নামেন্টে অল্পের জন্য টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড মিস করেন। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম ফিফটি ও দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি ঠিকই। তার ঝড়ো সেঞ্চুরিতে আজ (শনিবার) হংকংকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে আসর শুরু করল বাংলাদেশ ‘এ।’
কাতারের দোহায় হংকংয়ের ১৬৭ রান স্রেফ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। হংকংয়ের দুর্বল বোলিং গুঁড়িয়ে ম্যাচ শেষ করেছে ১১ ওভারেই। ১৪ বলে ফিফটি করে রেকর্ড গড়ার পর হাবিবুর ৩৫ বলে শতরান ছুঁয়ে গড়ে ফেলেন আরেকটি রেকর্ড। ৮ চার ও ১০ ছক্কায় ৩৫ বলে ঠিক ১০০ রানেই অপরাজিত থাকেন তিনি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, দুটিতেই দ্রুততম শতরানের কীর্তি এখন সোহানের। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার সেঞ্চুরিটি ৪৯ বলে।
সোহান তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর আকবর আলি ম্যাচ শেষ করেন টানা পাঁচটি ছক্কায়। বাংলাদেশ অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ১৩ বলে ৪১ রান করে। এসিসি ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ নাম পরিবর্তন করে এবার থেকে হয়ে গেছে রাইজিং স্টার্স টুর্নামেন্ট। দোহার ওয়েস্ট এন্ড পার্ক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা হংকং প্রথম ওভারে হারায় উইকেট। অভিজ্ঞ জিশান আলিকে বিদায় করেন রিপন মন্ডল।
খুব ভালো করতে পারেননি আনশি রাথ ও নিজাকাত খানও। তিনে নেমে দলকে টেনে নেন বাবর হায়াত। ৪৯ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ১০ ওভারে হংকংয়ের রান ছিল ৬৫। ইনিংস গতিময় হয় মূলত ইয়াসিম মুর্তাজার ব্যাটে। তিন ছক্কায় ২২ বলে ৪০ রান করেন হংকং অধিনায়ক। আবু হায়দারের করা শেষ ওভারে চারটি ছক্কায় রান আসে ২৬। এর মধ্যে তিনটি ছক্কা মারেন কিঞ্চিত শাহ একাই। শেষ তিন ওভারে হংকং তোলে ৩৮ রান।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই আতিক ইকবালকে তিনটি ছক্কায় উড়িয়ে দেন সোহান। পরের ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে টানা তিনটি চার একটি ছক্কা। পরের ওভারে মুর্তাজার টানা তিন বলে ছক্কা-চার-ছক্কায় তৃতীয় ওভারেই ফিফটি করে ফেলেন তিনি ১৪ বলে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ১৬ বলে ফিফটির আগের রেকর্ড করেছিলেন শুভাগত হোম। ৫ ওভার শেষে সোহানের রান ছিল ২৪ বলে ৮৮।
অবিশ্বাস্যভাবে, তখনও পর্যন্ত দৌড়ে কোনো রানই নেননি তিনি! সব রানই ছিল বাউন্ডারি থেকে, ১০ ছক্কা ও ৭ চার। পরের দুই বলে ছক্কা মারতে পারলে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড ভেঙে দিতে পারতেন সোহান। তবে সেটি হয়নি। তখনও পর্যন্ত জিসান আলম ছিলেন স্রেফ দর্শক। তিনি নিজেও যথেষ্ট আগ্রাসী ব্যাটসম্যান। কিন্তু ৫ ওভার শেষে তার রান ছিল ৬ বলে কেবল ৩। ষষ্ঠ ওভারে তিনটি চারে নিজেকে অস্তিত্ব জানান দেন জিসান। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ১০৭ রান।
পরের ওভারে আরেকটি চার মেরে জিসান আউট হয়ে যান সীমানায় ধরা পড়ে ১৪ বলে ২০। জাওয়াদ আবরার ২ টেকেননি বেশিক্ষণ। সোহান ও আকবর শেষ করেন কাজ। টি-টোয়েন্টিতে আগে এক দফায় ৯৪ রান করে আউট হয়েছিলেন সোহান। পরের ম্যাচে সোমবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ‘এ।’ গ্রুপের অন্য দল শ্রীলঙ্কা ‘এ’। এই টুর্নামেন্টে আইসিসি পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর ‘এ’ দল অংশ নিচ্ছে, সহযোগী দেশগুলোর খেলছে জাতীয় দলই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
হংকং: ২০ ওভারে ১৬৭/৮
বাংলাদেশ ‘এ’: ১১ ওভারে ১৭১/২
ফল: বাংলাদেশ ‘এ’ দল ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: হাবিবুর রহমান সোহান।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩


















