দিল্লিতে রানের ছড়াছড়ি। ৭৫৪ রানের এক ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার ৫ উইকেটের ৪২৮ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা ৪৪ ওভার ৫ বলে ৩২৬ রানে অলআউট হয়েছে। ১০২ রানের বিশাল জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা ম্যাচে রেকর্ডের ছড়াছড়ি। রানের পাহাড়ে উঠে একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ, এক ইনিংসে তিন সেঞ্চুরি, সবচেয়ে কম বলে দ্রুততম সেঞ্চুরি সবই করেছেন প্রোটিয়াস ব্যাটাররা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ৪২৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেঞ্চুরি করেছেন তিন ব্যাটার কুইন্টন ডি কক, রসি ভ্যান ডার ডুসেন ও এইডেন মার্করাম। আর ৪৯ বলে সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন এইডেন মার্করাম।
দিল্লিতে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে শুরুতে আনন্দে ভাসলেও তা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি শ্রীলঙ্কার। দলীয় ১০ রানে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরই হতাশার গল্প শুরু হতে থাকে শ্রীলঙ্কার। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা এতোটা চড়াও হবেন তা হয়তো কখনই ভাবেন নি লঙ্কান বোলাররা। উইকেটের চারদিকে রানের ফোয়ারা বইয়ে দিয়েছেন কুইন্টন ডি কক ও রসি ভ্যান ডার ডুসেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৭৪ বলে ২০৪ রান যোগ করেন তারা। সেঞ্চুরি করেন ওপেনিংয়ে নামা কুইন্টন ডি কক। ৮৩ বলে তিন অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছেন তিনি। এটি তার ১৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি আর বিশ্বকাপে প্রথম। এর পরের বলেই অবশ্য আউট হয়েছেন কুইন্টন ডি কক। তার দেখানো পথে হেঁটে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন রসি ভ্যান ডার ডুসেন। ১০৩ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম আর বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি করেন তিনি। ১০৮ রানে ডাসেন যখন আউট হয়েছেন তখন দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৩৭ ওভার ১ বলে ৩ উইকেটে ২৬৪ রান।
লঙ্কান বোলারদের উপর স্টিম রোলার চালিয়েছেন এইডেন মার্করাম। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। তবে পরের পঞ্চাশ রানে পৌঁছাতে টর্নেডো ইনিংস খেলেছেন তিনি। ১৫ বলে ৫২ রান করে তিন অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছেন এইডেন মার্করাম। ৪৯ বলে সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫৪ বলে ১০৬ রানে আউট হয়েছেন মার্করাম। ১৪ টি চার ও তিনটি ছয়ে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। এরপর এনরিখ ক্লাসেনের ২০ বলে ৩২ ও ডেভিড মিলারের ২১ বলে ৩৯ রানে ৫ উইকেটে ৪২৮ রানের পাহাড়ে উঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এটি।
দক্ষিণ আফ্রিকার রানের বোঝা বইতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। দলীয় সংগ্রহ যখন ১ রান তখন দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় তারা। রানের খাতা না খুলেই আউট হয়েছেন পাথুম নিশাঙ্কা। কুশল পেরেরা বিদায় নেন ৭ রান করে। তবে ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলেন কুশল মেন্ডিস। ২৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। শেষ পর্যন্ত ৪২ বলে ৭৬ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। মজার বিষয় হচ্ছে তার ইনিংসে চারের চেয়ে ছক্কার মার ছিল দ্বিগুণ। চারটি চারের বিপরীতে আটটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। টিকে থেকে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। ১৯ বলে ২৩ রান করে ফিরেছেন তিনি। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা করেন ১৪ বলে ১১ রান। রানের পেছনে ছুটেছেন চারিথ আসালাঙ্কা। কিন্তু ৬৫ বলে ৭৯ রানে থেমেছে তার ইনিংস। শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ তখন ৩২ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩২ রান। এক বল পরই কোন রান না করে আউট হয়েছেন দুনিথ ওয়াল্লালাগে। এরপর শ্রীলঙ্কার হয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। রানের গতিও ভালো ছিল শ্রীলঙ্কার। কিন্তু ৬৮ রানের বেশি যেতে পারেন নি তিনি। ৩১ বলে ৩৩ রান করেন কাসুন রাজিথা। শেষ ব্যাটার হিসেবে মাথিশা পাথিরানা আউট হলে বড় জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা।