প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে খেলতে নেমে ১৫৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারানো ভারতীয় দল তাদের পরের পাঁচ উইকেট হারিয়ে আর কোন রান যোগ না করেই। আবার প্রোটিয়ারা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫ রানে হারিয়েছে তিন উইকেট। দিনশেষে সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৬২ রান। এখনও তারা পিছিয়ে ৩৬ রানে।
এটাও বিশ্বাসযোগ্য কি না সেই প্রশ্ন আপনি করতে পারেন। তাও আবার নিজেদের মাটিতে। টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার এভাবে আত্নসমর্পণের দৃশ্যটা ছিলো অবিশ্বাস্য। কিন্তু ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের একেকটা ডেলিভারি যেন সেল হয়ে বিধেছে।
কেপ টাউনের নিউল্যান্ডসে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ডিন এলগার হয়তো ভাবতেও পারেননি তার সামনে কি অপেক্ষা করছে। বোলিংয়ের শুরুতেই অবশ্য আগুন ঝড়াচ্ছিলেন জসপ্রিত বুমরা ও মোহাম্মদ সিরাজ। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে দুইরান করা এইডেন মার্করাম সিরাজের বলে যশস্বী যশস্বী জয়সওয়ালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় দলীয় স্কোর ছিলো রান।
আরেক ওপেনার ও অধিনায়ক ডিন এলগার ফেরেন সিরাজের বলেই। মার্করামের চেয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ চার রান করে সরাসরি বোল্ড হয়ে ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে।
বুমরাই বা কম যাবেন কেন। ৯ম ওভারে ৩ রান করা ট্রিস্টান স্টাবসকে আউট করেন বুমরা। দক্ষিণ আফ্রিকার রান তখন ৩ উইকেটে ১১। এরপর সিরাজতো পুরোপুরি রুদ্রমূর্তী ধারণ করেন। দলটার দলীয় ৪৫ রানের মধ্যে একে এতে আউট করেন টনি ডি জর্জি, ডেভিংহাম, মার্কো জানসেন ও কাইল ভেরিন্নে-কে।
৪৫ রানে ৭ উইকেট হারানো দলটা রীতিমতো ধুকতে থাকে। পরে উইকেট তোলার উৎসবে যোগ দিয়ে বুমরা একটা ও আরেক মিডিয়াম পেসার মুকেশ কুমার দুই উইকেট তুলে নেন। ফলে ৫৫ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস। তারা খেলেছে মাত্র ২৩ ওভার দুই বল।
টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করা সিরাজ ছয় উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৫ রানে। বুমরার দুই উইকেট এসেছে ২৫ রান খরচায়। আর মুকেশ কুমারের দুই উইকেট এসেছে দুই রানের বিনিময়ে।
অসহায় আত্নসমর্পণ করা প্রোটিয়া ব্যাটারদের পর খেলতে নেমে দেখেশুনেই খেলছিলেন দুই ভারতীয় ওপেনার জয়সওয়াল ও রোহিত শর্মা। কাগিসো রাবাদার করা প্রথম ওভারে জয়সওয়ালের ব্যাটে কোন রান না আসলেও লেগবাই থেকে এসছে চার রান।
দ্বিতীয় ওভারে লুঙ্গি এনগিদির ওভারে তিন বাউন্ডারিতে রোহিত তুলে নেন ১২ রান। এক নো বল থেকে আরও এক রান। সব মিলিয়ে দুই ওভারে ১৭ রান।
তৃতীয় ওভারের শুরুতেই রাবাদার বলে স্ট্যাম্প উড়ে যায় শূন্য রানে থাকা জয়সওয়ালের। তাতে করে মারমুখি থাকা রোহিতকে থামানো যায়নি। শুভমান গিলের সাথে গড়েন ৫৫ রানের জুটি। পরে তাকে আউট করেন নান্দ্রে বারগার। ৩৯ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক। বারগারের বলেই ফেরেন শুভমান গিলও। ৩৬ রান করেন শচিন টেন্ডুলকারের হবু জামাতা। ভারতের রান তখন ৩ উইকেটে ১০৫ রান।
এর পাঁচ রান পরই ফেরেনে আইয়ার ব্যক্তিগত শূন্য রানে। ঠিক তখনও বোঝা যায়নি কি অপেক্ষা করছে দলটার সামনে। কে এল রাহুল একপ্রান্ত আগলে রাখেন। রান তোলার কাজটা করছিলেন বিরাট কোহলি।
লুঙ্গি এনগিডির করা ৩৪ ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ৮ রান রাহুল ফিরে যাওয়ার পরই শুরু হয় ধ্বস। ওই ওভারেই আউট হন রবীন্দ্র জাদেজা ও জসপ্রিত বুমরা। পরের ওভারেই অর্থাৎ ৩৫তম ওভারে কাগিসো রাবাদা ঝড়ে উড়ে যায় ভারতের শেষ তিন উইকেট। এর মধ্যে সিরাজ অবশ্য রান আউট হয়েছেন। কোহলি ও কৃষ্ণা ফিরছেন মার্করামের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩














