এল ক্লাসিকোতে রেগে যাওয়ায় খেলোয়াড়দের সেজনির বার্তা।

সেজনি

সপ্তাহখানেক আগে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ২–১ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। শেষ বাঁশির পর হাত মেলানো মুহূর্তেই উত্তেজনা টগবগ করছিল—দানি কারভাহালের সঙ্গে লামিনে ইয়ামালের কথাকাটাকাটি, পরে সেই সুর ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দিকেও ছড়িয়ে যায়। মাঝপথে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। এত সব নাটকের ভিড়ে যে মুখটি শান্ত ছিল, তিনি গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি—রাত্রিটা যাঁর জন্য ছিল পরিসংখ্যানের রেকর্ডে ভরা।

সেজনি ম্যাচ-পরবর্তী সেই উত্তাপকে দেখলেন ভিন্ন চোখে। তাঁর ভাষায়, “ক্যারিয়ারের শুরুতেই শিখেছি—আবেগ আমাকে সাহায্য করে না। এমন মুহূর্তে নিজেকে ভিড় থেকে আলাদা করি। ম্যাচটা হারেছি, কিন্তু এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সবাইকে বলব—মেডিটেশন করুন, লম্বা শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।”

তিনি জানালেন, কিক-অফের আগে ও হাফটাইমে নিয়মিত ধ্যান করেন। “লকার রুমের মাঝখানে বসে যখন শ্বাস-প্রশ্বাসে মন দিই, অনেকে কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু স্বাভাবিক কিংবা উত্তপ্ত—দুই পরিস্থিতিতেই নিয়ন্ত্রিত শ্বাস খুব জরুরি,” বললেন এই অভিজ্ঞ গোলরক্ষক।

হারের হতাশা থাকলেও সেজনির সংখ্যাই বলছে তাঁর প্রভাবের গল্প। নয়টি সেভ—এল ক্লাসিকোয় ২০১৭ সালের পর কোনো গোলরক্ষকের সর্বোচ্চ। সঙ্গে একটি পেনাল্টি সেভ, যা বার্সা–রিয়াল লড়াইয়ে ২০১৫–১৬ মৌসুমের পর প্রথম। সেই পেনাল্টিতে সামনে ছিলেন কিলিয়ান এমবাপে। এর আগেও সেজনি স্পট-কিকে থামিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রকে।

স্পট-কিক ঠেকাতে সুক্ষ্ম প্রস্তুতিকেই কৃতিত্ব দিলেন সেজনি। “ম্যাচের আগে সম্ভাব্য পেনাল্টি-টেকারদের নিয়ে পড়াশোনা করি। যে–ই নিতে পারে, তার সর্বশেষ ২০টি শট আমি দেখি,” বললেন তিনি। “অনেক সময় রান-আপ দেখেই আগাম কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায়। বড় মুহূর্তে ফুটবলাররা ভিন্নভাবে শট নেয়—সেখানেই ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে পারে। তাই প্রতিপক্ষ সম্পর্কে যতটা সম্ভব তথ্য জোগাড় করে তেমনই প্রস্তুতি নিই।”

এমবাপ্পের প্রসঙ্গে তাঁর পড়াশোনাই কাজে দিয়েছে, দাবি সেজনির। “গত মৌসুমে সে আমার বিপক্ষে পেনাল্টিতে গোল করেছিল। মনে হচ্ছিল এবারও একই দিকে যাবে। প্রত্যাশামতোই গেছে—আর সৌভাগ্যক্রমে আমি তা ঠেকাতে পেরেছি।”

Exit mobile version