গতকাল অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত এএফসি নারী এশিয়ান কাপ ২০২৬-এর ড্র অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো মূলপর্বে জায়গা পাওয়া বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে রাখা হয়েছে ‘বি’ গ্রুপে। গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছে এশিয়ার দুই পরাশক্তি চীন ও উত্তর কোরিয়া এবং মধ্য এশিয়ার দল উজবেকিস্তান। এই গ্রুপকে অনেকেই ‘মৃত্যুকূপ’ আখ্যা দিয়েছেন।
এই গ্রুপিং নিয়ে বাংলাদেশ নারী দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার বলেন, ‘গ্রুপটা খুবই কঠিন, তবে আমি মুখিয়ে আছি। আমার মনে হয়, এটা মেনে নেওয়া ও উপভোগ করা উচিত।’
চীন নারী ফুটবলের ইতিহাস গৌরবময়—তারা ৯ বার এশিয়ান কাপ জিতেছে। উত্তর কোরিয়াও পিছিয়ে নেই, তাদের ঝুলিতে রয়েছে তিনটি শিরোপা। এই দুই জায়ান্ট দলের বিপক্ষে লড়াই করাটাই বাংলাদেশের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ। তবে কোচ বাটলার চান সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমরা উন্নতির পথে আছি। চীনের বিপক্ষে খেলা খুব কঠিন হবে, উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষেও তাই। কিন্তু সবকিছুই সম্ভব। আমি এই চ্যালেঞ্জ নিতে চাই এবং সবাইকে বলতে চাই আমরা লড়াই করব, নিজেদের সর্বোচ্চটা দেব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা একটা ভালো ছাপ রাখব।’
বাংলাদেশ এই প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে অংশ নিচ্ছে। তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না বাটলার। তার দৃষ্টি কোয়ার্টার ফাইনালের দিকে, কারণ সেখান থেকে সুযোগ মিলতে পারে ২০২৭ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে।
সামনে ছয় মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কোচ। তবে তার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নির্ভর করছে বাফুফের সহায়তার ওপর। তিনি জানান, ‘আমার পরিকল্পনা আছে, তবে সবকিছু নির্ভর করছে বাফুফের অর্থায়নের ওপর। কথা বলা সহজ। আমি বলতে পারি, আমি সৌদি আরবে খেলতে চাই অথবা অন্য কোথাও যেতে চাই। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমার হাতে নেই। আমি কেবল অনুরোধ করতে পারি, বাকিটা আসলে বাফুফের ব্যাপার।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি পরিকল্পনা ও কৌশল দিয়ে থাকি, এরপর সব নির্ভর করে কর্তৃপক্ষের ওপর যাদের অর্থের ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করছি, আমরা কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ ও প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারব।’
ড্র অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় ও কোচরা অংশ নিলেও বাংলাদেশের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার এবং কোচ বাটলার উপস্থিত থাকতে পারেননি। কারণ তারা এখন ব্যস্ত এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ বাছাইয়ের প্রস্তুতিতে। বাংলাদেশ দল আগামী ২ আগস্ট লাওস যাবে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে।
এ বিষয়ে বাটলার বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমার স্কোয়াড প্রায় ঠিকঠাক হয়ে গেছে। কিছু ছোটখাট পরিবর্তন হতে পারে। তবে আমাদের অনূর্ধ্ব-২০ দল খুবই ভালো করেছে। জাতীয় দলের নির্বাচনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছে। আমাদের আরও কিছু খেলোয়াড়, যাদের প্রয়োজন হলে ডাকা হবে।’
তবে টুর্নামেন্টের ড্র নিয়ে অধিনায়ক বা অন্য কোনো ফুটবলারের মন্তব্য গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। কারণ, ফেডারেশন পক্ষ থেকে খেলোয়াড়দের এ বিষয়ে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যেখানে অন্য দেশের খেলোয়াড়রা খোলামেলা মত প্রকাশ করেছেন, সেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুধুই কোচের বক্তব্য দিয়ে কাজ সেরেছে কর্তৃপক্ষ।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















