সাম্প্রতিক সময়ে চোট যেন নেইমারের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঁ হাঁটুর মেনিসকাসে ছেঁড়া অংশ থেকে আসা অবিরাম ব্যথা তার মাঠে ফেরা অনিশ্চিত করে তুলেছিল। চিকিৎসকেরা তাকে বছরের বাকি সময় বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন, সঙ্গে দ্রুত আথ্রোস্কোপি করার প্রস্তাবও দিয়েছেন। সেই অস্ত্রোপচার করালে কমপক্ষে এক মাস মাঠের বাইরে থাকতে হতো ব্রাজিল তারকাকে।
এই পরিস্থিতিতে নেইমারের বিশ্বকাপ-যাত্রা এবং অবনমন অঞ্চলে থাকা সান্তোসের লিগ টিকে থাকার লড়াই দুটোই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবু সব শঙ্কা উপেক্ষা করে আজ ঝুঁকি নিয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি। আর নামতেই যেন বদলে গেছে সান্তোসের চেহারা। স্পোর্ত রেসিফের বিপক্ষে নেইমার নিজে এক গোল করেছেন, বানিয়ে দিয়েছেন আরেকটি; তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ৩–০ ব্যবধানে গুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়েছে সান্তোস।
এই জয়ে ৩৬ ম্যাচে সান্তোসের পয়েন্ট এখন ৪১, উঠেছে টেবিলের ১৫তম স্থানে। তবে অবনমনের ভয় এখনো কাটেনি। ১৭ নম্বরে থাকা ভিক্তোরিয়ার পয়েন্ট ৩৯, হাতে আছে একটি ম্যাচও বেশি। ফলে লিগে টিকে থাকতে শেষ দুই ম্যাচ সান্তোসের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ।
চোট পাওয়া সত্ত্বেও নেইমার গতকালই অনুশীলনে অংশ নেন, যদিও ব্রাজিলের বহু গণমাধ্যম জানিয়েছিল, ম্যাচে তার না নামার সম্ভাবনা বেশি। হাঁটুর একই জায়গায় আবার আঘাত পেলে তা দীর্ঘমেয়াদি চোটে রূপ নিতে পারে, তাই উদ্বেগ ছিল যথেষ্টই।
কিন্তু নেইমার যেন সব হিসেব-নিকেশ উল্টে দিলেন। শুরু থেকেই আক্রমণে ছিলেন তীক্ষ্ণ ও প্রাণবন্ত। সুযোগ তৈরি করেছেন, সতীর্থদের খেলিয়েছেন, নিজেও শট নিয়েছেন। অনেক চেষ্টার পর ২৬ মিনিটে গুলিয়ের্মে অগুস্তোর পাস থেকে বক্সের বাঁ দিক দিয়ে কোনাকুনি শটে দলকে এগিয়ে দেন তিনি। দ্বিতীয় গোল আসে ৬৭ মিনিটে—নেইমারের নেওয়া কর্নার থেকে জোয়াও স্মিথের দারুণ হেডে। এর মাঝখানে একটি আত্মঘাতী গোল সান্তোসকে আরও স্বস্তি দেয়।
সংখ্যাগুলোও বলছে, কেন নেইমার আজ সবার নজর কাড়লেন ৩টি সফল ড্রিবল, ৪টি গ্রাউন্ড ডুয়েল জেতা, ৪টি গোলের সুযোগ তৈরি, ৭টি শটের মধ্যে ৩টি লক্ষ্যে, ৩টি প্রতিহত।
চোটে থাকা একজন খেলোয়াড় এমন পারফরম্যান্স দিলে তাকে নিয়ে বিস্মিত হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















