নেইমার ও বিতর্ক যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। সান্তোসে প্রত্যাবর্তনের পর মাঠে মনমতো কিছু করতে না পারলেও, মাঠের বাইরের ঘটনা তাঁকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। এবার গুঞ্জন, ইউরোপে ফিরতে পারেন নেইমার। কিন্তু চমক এখানেই—সম্ভাব্য গন্তব্য প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব, অলিম্পিক দ্য মার্সেই! এমনটাই জানিয়েছে একাধিক ফরাসি সংবাদমাধ্যম।

সাম্প্রতিক মৌসুমে আল-হিলাল ছেড়ে নিজের শেকড়ে, সান্তোসে ফিরেছিলেন নেইমার। কিন্তু সেই প্রত্যাবর্তন আশাভঙ্গেই শেষ হয়েছে। ইনজুরি তাঁকে মৌসুমের অধিকাংশ সময়ই মাঠের বাইরে রেখেছে—মাত্র ১৬টি ম্যাচ খেলেছেন ২৭টির মধ্যে। পারফরম্যান্সও ছিল অনেকটাই নিষ্প্রভ।

তার উপর, ইন্টার পোর্তো আলেগ্রের বিপক্ষে হারের পর মাঠের বাইরের এক ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ওই ম্যাচে এক সমর্থকের সঙ্গে তর্কে জড়ান নেইমার। সমর্থক অভিযোগ করেন, নেইমার যথেষ্ট দায়িত্বশীল আচরণ করছেন না। জবাবে নেইমার পাল্টা অভিযোগে বলেন, ওই ব্যক্তি তার পরিবারকে অপমান করেছেন।
এ ঘটনার পর সান্তোসের সমর্থকেরা প্রকাশ করে কড়া বিবৃতি। নেইমারকে সরাসরি উদ্দেশ করে তাতে লেখা হয়-‘আপনি আমাদের আইডল, তাই আপনাকে এমন আচরণ করতে বলছি, যা একজন আইডলের মতো।’ বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নেইমার অন্য কোথাও বেশি অর্থ পেতেন, সেটি সমর্থকেরা জানে, কিন্তু তারা শুধু এমন একজন নায়কের আচরণ চেয়েছে, যিনি তাদের হতাশা বুঝবেন।
বর্তমানে ব্রাজিলিয়ান সিরি আ-তে সান্তোস রয়েছে ১৭তম স্থানে- রেলিগেশনের পর্যায়ে। এমন পরিস্থিতিতে ক্লাব ছাড়ার কথা ভাবা যে অস্বাভাবিক নয়, সেটি অনুমেয়। ঠিক এমন সময়েই ইউরোপে ফিরতে পারেন নেইমার, যার সবচেয়ে সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছে ফ্রেঞ্চ ক্লাব মার্সেইয়ের নাম।

নতুন কোচ রবার্তো দে জারবির অধীনে মার্সেই চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই দলে আছেন আর্জেন্টাইন তরুণ তারকারা ফাকুন্দো মেদিনা ও লিওনার্দো বালের্দি। নেইমার যোগ দিলে এই দলটা যেমন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, তেমনি বিশ্ব ফুটবলেও এক বড় আলোড়নের সৃষ্টি হবে।
২০২৬ বিশ্বকাপ আর বেশি দূরে নয়। নিজের শেষ বিশ্বকাপটা সামনে রেখে নেইমার শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় ফেরার জন্য মরিয়া। এমন সময় মার্সেই যদি সুযোগ দেয়, তবে সেটা লুফে নিতে তিনি যে পিছপা হবেন না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে পিএসজির সাবেক তারকা মার্সেইয়ে নাম লেখালে তা নিছক একটি দলবদল নয়, বরং একটি আগুনে ঘি ঢালার মতো ঘটনা হবে। কারণ, পিএসজিতে নেইমার খেলেছেন ২০০টিরও বেশি ম্যাচ, এবং ক্লাব ছাড়ার সময়ও কম নাটক হয়নি। এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর হয়ে খেলতে নামা মানেই নতুন করে বিতর্ক, উত্তেজনা আর আলোচনার ঝড় বইবেই।
তবে নেইমার যেখানেই খেলুক তার কোটি-কোটি ভক্ত আধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করবে তার খেলা দেখার। ট্রান্সফারের বিতর্ক যতই থাকুক, ফ্যানদের ভালোবাসায় কখনোই ভাটি পরবে না নেইমারের।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















