আগামী বছরের ১ থেকে ২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারী এশিয়া কাপ। প্রথমবারের মতো এই প্রতিযোগিতায় খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের ড্র অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ, সিডনির হারবার শহরে। তবে দুঃখজনকভাবে, এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত নেই।
১২ দলের অংশগ্রহণে আয়োজিত হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টের ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াসহ এএফসি অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর কোচ ও অধিনায়কদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। গতকাল ড্র অনুষ্ঠানের আগমুহূর্তে অনুষ্ঠিত ফটোসেশনে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে অনুপস্থিত ছিল জাপান, উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং ফিলিপাইন।
প্রশ্ন উঠছে—বাংলাদেশ যখন প্রথমবারের মতো নারী এশিয়া কাপে অংশ নিতে যাচ্ছে, তখন এই সম্মানজনক আমন্ত্রণ উপেক্ষা করা হলো কেন? এএফসি আয়োজিত অন্যান্য টুর্নামেন্টের মতো এবার ড্রটি কুয়ালালামপুরে না করে জমকালো আয়োজনে সিডনিতে করা হচ্ছে, যা মহাদেশীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ নারী দলের পরিচিতি আরও বাড়াতে পারত।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “এই বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। সভাপতিকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।” অথচ দেশের নারী ফুটবল কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই পরিচালিত হয় তাঁর নেতৃত্বে। এই দায়িত্ব ফেডারেশনের সভাপতির দিকে ঠেলে দেওয়া একপ্রকার দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা বলেই মনে করছেন অনেকেই।
অনেকে বলছেন, অধিনায়ক আফিদা খন্দকার ও কোচ পিটার বাটলার বর্তমানে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও, সিনিয়র কোনো খেলোয়াড়কে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো যেত। যেমন ভারত পাঠিয়েছে অধিনায়ক নয়, বরং সিনিয়র খেলোয়াড় সঙ্গীতা বাসফোরকে।
ড্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ রয়েছে চার নম্বর পটে।
এতে করে ভারত বা ইরানের সঙ্গে একই গ্রুপে পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এক নম্বর পটের শক্তিশালী দল—অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও উত্তর কোরিয়ার যে কোনও একটি দলের সঙ্গে বাংলাদেশের মুখোমুখি হওয়া নিশ্চিত। দ্বিতীয় পটে রয়েছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভিয়েতনাম। বাংলাদেশের জন্য তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ হতে পারে ভিয়েতনাম।
তবে আসল চ্যালেঞ্জ আসবে তৃতীয় পট থেকে। এখানে রয়েছে ফিলিপাইন, চাইনিজ তাইপে ও উজবেকিস্তান। এই তিন দলের যেকোনো একটির বিপক্ষে জয় পেতে হবে ঋতুপর্ণাদের। কারণ, তিনটি গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থাকা দলের মধ্যে সেরা দুই দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। আর কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেই সামনে খুলে যেতে পারে ব্রাজিল ২০২৭ নারী বিশ্বকাপ ও লস অ্যাঞ্জেলেস ২০২৮ অলিম্পিকের দরজা।
যেখানে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেখানে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আয়োজনকে উপেক্ষা করায় বাফুফের ভূমিকা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। অনেকেই বলছেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের উপস্থিতি নিশ্চিত করাই ছিল বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩











