সাও পাওলোর মরুম্বি স্টেডিয়ামে রোববার রাতটি সান্তোস এবং নেইমারের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো। ৯৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার নিজেদের মাঠে ছয় গোলে হার মানতে হলো পেলের ক্লাবকে। প্রতিপক্ষ ভাস্কো দা গামার আক্রমণে ভেঙে পড়ে সান্তোস। ম্যাচ চলাকালীন দর্শকরা হতাশা প্রকাশ করলেও, শেষ পর্যন্ত নেইমারের চোখে জল ধরে রাখা যায়নি। ম্যাচের কয়েক মিনিটের মধ্যেই কোচ ক্লেবার জেভিয়ারকে বরখাস্ত করা হয়।
শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে মাঠেই আবেগে ভেঙে পড়েন নেইমার। মাঠ থেকে বেরোতে গিয়ে তিনি নিজের চোখের জল সামলাতে পারেননি। ভাস্কোর কোচ ফার্নান্দো দিনিজ ছুটে এসে তাকে সমবেদনা জানান। ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন,
“এটা লজ্জাজনক। সান্তোসের জার্সি পরে এমনভাবে খেলা খুব বাজে অভিজ্ঞতা। আমাদের সবার মাথা ঠান্ডা করে ভাবা দরকার, আসলেই আমরা কী করতে চাই।”
৩৩ বছর বয়সী নেইমারের ক্যারিয়ারে এটিই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার। এর আগে কখনোই তিনি ছয় গোলের ব্যবধানে হেরে মাঠ ত্যাগ করেননি।
ম্যাচে ভাস্কো রীতিমতো আধিপত্য দেখায়। ফিলিপে কৌতিনিয়ো জোড়া গোল করেন, এছাড়া গোল আসে লুকাস পিতোঁ, রায়ান, ডেভিড এবং তচে তচের কাছ থেকে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে টানা পাঁচ গোল হজম করে সান্তোসের খেলা একেবারে ভেঙে পড়ে।
৫৩ হাজার দর্শকের উপস্থিতি থাকা মরুম্বিতে ম্যাচের শেষের আগে অনেকেই মাঠ ছেড়ে চলে যান, কেউ দাঁড়িয়ে থেকে দলের প্রতি পিঠ ঘুরিয়ে দেন। এর পরেই সান্তোস কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয়—চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয় কোচ ক্লেবার জেভিয়ারকে।
এই জয়ের ফলে পয়েন্ট তালিকায় ভাস্কো উঠে আসে ১৬তম স্থানে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে, আপাতত অবনমন অঞ্চলের বাইরে। অন্যদিকে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ১৫তম স্থানে থাকা সান্তোস এখন চরম হুমকির মুখে, যদিও হাতে আছে একটি ম্যাচ বেশি।
ইনজুরি কাটিয়ে নেইমার টানা ছয় ম্যাচে ৯০ মিনিট খেলে মাঠে ছিলেন, কিন্তু তার পারফরম্যান্স ম্লান ছিল। অন্যদিকে কৌতিনিয়োর দমদার খেলা আলো ছড়িয়েছে। ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ কার্লো আনচেলত্তি যখন বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য দল বাছাই নিয়ে ব্যস্ত, তখন নেইমারের এই খেলা প্রশ্ন তোলে—তিনি আসন্ন দলে কতটা অপরিহার্য।
মরুম্বির রাতটি তাই শুধু সান্তোস নয়, নেইমারের ক্যারিয়ারকেও নতুন দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















