ভোর থেকে উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা আর অপেক্ষা। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সদস্যরা অপেক্ষায় ছিলেন নিরাপদে দেশে ফেরার। অবশেষে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে তারা ঢাকার কুর্মিটোলা এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে অবতরণ করেন। সেই বিমানে তাদের সঙ্গে ফিরেছেন নেপালে থাকা ক্রীড়া সাংবাদিকরাও।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বিষয়টি তাদের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে নিশ্চিত করেছে। পোস্টে লেখা হয়, “নেপালে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সি-১৩০বি বিমান এর বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে সফলভাবে দেশে প্রত্যাবর্তন করেছে।”
ফুটবল দলের আটকে পড়ার গল্পটা তৈরি হয় হঠাৎ করেই। ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কবলে পড়ে যায় দলটি। কাঠমান্ডুর হোটেলে অবস্থানকালে সরকারবিরোধী আন্দোলনের কারণে ৯ সেপ্টেম্বর মাঠে নামতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায় নির্ধারিত ম্যাচটি।
দলটির যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে তৎপর হয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো। কাঠমান্ডুর বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত শফিকুর রহমান ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা সক্রিয় ভূমিকা নেন। বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে তারা নিশ্চিত করেন, যেন ফুটবলাররা নিরাপদে বিমানে উঠতে পারেন।
ফুটবল দলের দেশে ফেরার এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়েছে বাফুফে, বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সরকারের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। শুধু খেলোয়াড়রা নয়, ম্যাচ কাভার করতে যাওয়া ক্রীড়া সাংবাদিকরাও একই বিমানে ফিরেছেন ঢাকায়।
এর আগে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, “আটকে পড়া জাতীয় ফুটবল দলকে নিরাপদে ফেরাতে নেপালের উদ্দেশে বিমানবাহিনীর বিমান পাঠিয়েছে সরকার।”
বাংলাদেশ ফুটবল দল ৩ সেপ্টেম্বর নেপালে গিয়েছিল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে। ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও আন্দোলন ও সহিংসতার কারণে সেটি বাতিল হয়ে যায়।
সবশেষে বিশেষ ফ্লাইটে নিরাপদে দেশে ফেরা—এ যেন অস্থিরতার মধ্যে স্বস্তির খবর। অন্তত এখন জামাল ভূঁইয়ারা ফের নতুন করে মনোযোগ দিতে পারবেন ফুটবল মাঠের লড়াইয়ে।
