বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনও ছয় মাস। কিন্তু কাউন্টডাউনটা যেন নেইমার জুনিয়রের জন্য অন্যরকম। পুরোপুরি ফিট হয়ে দলে ফেরার জন্য কোচ আনচেলেত্তির বেধে দেয়া দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি মার্চের দুটি প্রীতি ম্যাচের পরই স্কোয়াড ঠিকঠাক গুছিয়ে ফেলতে চান। ফলে নেইমারের হাতে থাকা সময় আরও কমে যেতে পারে। তার সাম্প্রতিক মন্তব্যেও স্পষ্ট, এই তারকা ফরোয়ার্ডকে নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে।
গতরাতে ওয়াশিংটন ডিসির জন এফ. কেনেডি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ এর ড্র। আজ রাতে দিন, তারিখ, সময় ও ভেন্যু জানাবে ফিফা। ড্রতে ব্রাজিল পেয়েছে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ—সি গ্রুপে তাদের সঙ্গে মরক্কো, হাইতি ও স্কটল্যান্ড। ড্র–পরবর্তী সাক্ষাৎকারে দলের শক্তি, প্রত্যাশা এবং নেইমারের প্রসঙ্গে খোলামেলা মত দেন আনচেলত্তি।
আনচেলত্তি বলেন, “যদি নেইমার স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার মতো অবস্থায় থাকে, অন্যদের চেয়ে শারীরিকভাবে এগিয়ে থাকে, তবে সে বিশ্বকাপে খেলবে। কিন্তু আমি কারও কাছে বাধ্য নই। নেইমারের জন্য যেমন ভাবছি, অন্যদের জন্যও একইভাবে ভাবতে হবে। আমাদের এমন ব্রাজিলকে ভাবতে হবে, যেখানে নেইমার আছে, আবার নেইমার নেই। মার্চের ফিফা ফিক্সচারের পরই আমরা চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করব।”
২০২৩ সালের অক্টোবরে এ সি এল ইনজুরিতে পড়ে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন নেইমার। এখনও পুরোপুরি ফিট নন, বরং চিকিৎসকের পরামর্শ অমান্য করে ইনজুরি নিয়েই খেলছেন সান্তোসের হয়ে। তার হাঁটুতে দ্রুত সার্জারি প্রয়োজন, এ কথা চিকিৎসকরাই জানিয়েছেন। তবুও সান্তোসের রেলিগেশন বাঁচাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। টানা দুই ম্যাচ খেলেছেন, শেষ ম্যাচে করেছেন হ্যাটট্রিক। সান্তোসের আরও একটি ম্যাচ বাকি, সেখানে খেলাও অসম্ভব নয়।
২০১৪ বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিলের সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন নেইমার। তবে আনচেলত্তির কাছে ব্যক্তিগত তারকার ঝলক নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো দলীয় সাফল্য। তিনি বলেন, “আমাদের দলে সেরা গোলরক্ষক আছে, দুর্দান্ত ডিফেন্ডার আছে, বিশ্বমানের মিডফিল্ড ও স্ট্রাইকারও আছে। আমি এমন কাউকে চাই না, যে শুধু ব্যক্তিগতভাবে সেরা হতে চায়। আমার দরকার এমন খেলোয়াড়, যে বিশ্বকাপ জিততে চায়।”
গ্রুপপর্ব নিয়েও আশাবাদী সেলেসাও কোচ। তিনি বলেন, “আমরা তিন ম্যাচেই জয়ের সামর্থ্য রাখি। আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানসিকতা ধরে রাখতে হবে। আমরা ফাইনাল খেলতে চাই, আর সে জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী দলগুলোর সঙ্গেই লড়াই করতে হবে।”
বিশ্বকাপের মঞ্চ যতই কাছে আসছে, ততই বড় হয়ে উঠছে নেইমারের পরীক্ষা। এখন বাকিটা নির্ভর করছে চোট, ফিটনেস আর সময়ের সঙ্গে সেই দৌড়ে তিনি কতটা এগিয়ে থাকতে পারেন।
