একসময় ব্রাজিল ফুটবলের আলোচিত নাম ছিলেন রবিনহো। রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে মাঠ মাতানো এই ফরোয়ার্ড এখন কারাগারের জীবনে অভ্যস্ত। ২০১৩ সালে মিলানে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ইতালির আদালত তাকে ও তার বন্ধুদের ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে ব্রাজিল সরকার তাকে দেশে রেখেই সাজা কার্যকর করছে।
২০২৪ সালের ২১ মার্চ থেকে রবিনহো সাও পাওলোর ট্রেমেম্বে শহরের ড. হোসে অগুস্তো সিজার সালগাদো কারাগারের আট বর্গমিটারের ছোট সেলে বন্দি। এখান থেকে সম্প্রতি ৪১ বছর বয়সী এই সাবেক তারকা প্রথমবারের মতো ভিডিও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে রবিনহো জানিয়েছেন, “আমি এখানে অন্য বন্দিদের মতোই জীবনযাপন করি। খাওয়া, ঘুম, কাজ—সবই একই নিয়মে চলে। কখনও কোনো বিশেষ সুবিধা পাই না।” তিনি আরও বলেন, “আমি কোনো নেতৃত্বে নেই। নিরাপত্তাকর্মীরাই সব নিয়ন্ত্রণ করেন। আমরা শুধু নিয়ম মেনে চলি।”
পরিবারের সঙ্গে তার সাক্ষাৎও সীমিত—সপ্তাহে একবার রোববার। রবিনহো জানান, স্ত্রী এবং তিন সন্তান এই সময়েই তাকে দেখতে আসেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেখা-সাক্ষাৎও সবার মতোই হয়, কোনো ভিন্নতা নেই।”
ভিডিও সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে ব্রাজিলের স্থানীয় অলাভজনক সংস্থা তাউবাতে কমিউনিটি কাউন্সিল। এখানে দেখা গেছে, রবিনহো কারাগারের নিয়মিত রুটিন অনুসরণ করছেন—সপ্তাহে এক-দুবার ফুটবল খেলা, বই পড়া এবং ইলেকট্রনিকসের প্রাথমিক ক্লাসে অংশ নেওয়া।
রবিনহো নিজেকে এখনও নির্দোষ দাবি করছেন। তার ভাষায়, “আমি জানি আমি কী করেছি আর কী করিনি। যা বলা হচ্ছে, তা সত্য নয়। এটি একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা, মেয়েটি তখন মাতাল অবস্থায় ছিল এবং বিষয়টি পারস্পরিক সম্মতির ছিল।”
২০১৩ সালে এই অভিযোগ ওঠার সময় তিনি এসি মিলানে খেলছিলেন। ফোনালাপে নিজেদের অপরাধ নিয়ে হেসে খুনিও করা হয়েছিল, যা পরে মামলা চলাকালে উঠে আসে। রবিনহোর কারাভোগ শুরু হয় ২০২৪ সালের মার্চে। একই মামলায় তার বন্ধু রিকার্দো ফালকো জুনে কারাগারে প্রবেশ করেন। আরেক অভিযুক্ত রুডনি গোমেজ মার্চে রহস্যজনকভাবে মারা যান।
বর্তমানে ৪১ বছর বয়সী রবিনহো ২০২০ সালে ফুটবল থেকে অবসর নেন। ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে তিনি দুটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলেন। কারাগারে তার দৈনন্দিন জীবন সহজ ও নিয়মতান্ত্রিক।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩


















