নিখুঁত সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালে চালু হয়েছিল ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তি। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের পর ফুটবল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশ করে ভিএআর যুগে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রযুক্তি নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। অনেক কোচ ও খেলোয়াড়ের অভিযোগ—ভিএআর ফুটবলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট করছে, পাশাপাশি সিদ্ধান্তে দেরি হওয়ায় খেলার গতি ব্যাহত হচ্ছে। এবার সেই জায়গায় আসতে পারে নতুন প্রযুক্তি ‘ফুটবল ভিডিও সাপোর্ট’ (এফভিএস), যেখানে থাকবে দুটি বিশেষ কার্ড—‘পার্পল’ ও ‘ব্লু’।
চলমান অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে মরোক্কো ও ফ্রান্সের সেমিফাইনাল ম্যাচে প্রথমবার এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ম্যাচ চলাকালে মরোক্কোর কোচ মোহাম্মদ ওয়াহবি রেফারির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে নীল কার্ড তুলেছিলেন, যদিও রিভিউ শেষে সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিফা পরীক্ষামূলকভাবে এফভিএস চালু করেছে, যেখানে কোচরা টেনিস বা ক্রিকেটের মতো সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) সুযোগ পাবেন। প্রতিটি ম্যাচের শুরুতে কোচদের দেওয়া হবে দুটি কার্ড—একটি ‘পার্পল’, অন্যটি ‘ব্লু’। কোচ ম্যাচে সর্বোচ্চ দুইবার রিভিউ নিতে পারবেন। যদি রিভিউয়ের পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হয়, তাহলে সেই কার্ড পুনরায় ব্যবহারযোগ্য হবে; আর সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকলে কার্ডটি বাতিল হয়ে যাবে।
রিভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়াটিও বেশ অনন্য। কোচকে প্রথমে আঙুল ঘুরিয়ে বৃত্তাকারে ইশারা দিতে হবে, যাতে চতুর্থ রেফারি বুঝতে পারেন তিনি রিভিউ চাইছেন। এরপর কোচ কার্ডটি হস্তান্তর করলে ঘটনার পরই আনুষ্ঠানিক ভিডিও পর্যালোচনা শুরু হবে।
ভিএআরের তুলনায় এফভিএস কম ব্যয়বহুল, সহজ ও স্থিতিশীল একটি পদ্ধতি বলে জানিয়েছে ফিফা। বর্তমানে ইতালির সিরি সি, স্পেনের প্রিমেরা ফেদেরাসিওন এবং ব্রাজিল ও ইতালির নারী লিগে এর ট্রায়াল চলছে।
ফিফা রেফারি কমিটির চেয়ারম্যান পিয়েরলুইগি কলিনা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ফলাফল আশাব্যঞ্জক। তিনি জানান, কাতার ও মরোক্কোয় অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপেও এটি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। যদি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে এফভিএস ভিএআরের চেয়ে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়, তাহলে আগামী ২০২৬ বিশ্বকাপেই ফুটবল বিশ্বে দেখা যেতে পারে এই নতুন ‘পার্পল’ ও ‘ব্লু’ কার্ডের যুগ।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩











