রোনালদোর অবসরের পরিকল্পনা : শেষ অধ্যায়ের প্রস্তুতি
মঙ্গলবার প্রকাশিত হয় তার ‘পিয়ার্স মরগানস’-কে দেওয়া সাক্ষাতকারটি। ওই প্রোগ্রামে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো জানিয়েছেন, তিনি ‘অতি শীঘ্র’ অবসর নেবেন। অবসরের পরিকল্পনায় রোনালদো । ফুটবল দুনিয়ায় জল্পনা—কখন বিদায় নেবেন এই পর্তুগিজ তারকা? জানুন তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিস্তারিত। এ সময় ৪০ বছরের এই তারকা অকপটে স্বীকার করেছেন যে, এরকম উদ্ভাসিত একটি ক্যারিয়ারের ইতি টানার বিষয়টি মানিয়ে নেওয়া খুবই কঠিন হবে। যেহেতু তিনি কিছু সময়ের মধ্যেই ফুটবল পরবর্তী জীবন-যাপনের একটি পরিকল্পনায় আছেন সেজন্যই তার কাছে এমনটা মনে হচ্ছে।
৪০ বছর বয়সেও টগবগে তরুণের মতো এখন পর্যন্ত মাঠ দাপিয়ে চলেছেন পর্তুগালের সুপারস্টার ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কোনোভাবেই যেন থামছেন না তিনি। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে যখন ভালো করতে পারছিলেন না এবং কোচও তাকে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রাখছিলেন সবাই ভেবেছিলেন ক্যারিয়ার এখানেই শেষ সিআরসেভেন খ্যাত এই বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল তারকার। এরপর তিনি সৌদি আরবের ‘প্রো’ ফুটবলে যোগ দেওয়াতে মনে হচ্ছিল আর কোনোভাবেই রোনালদোর ফুটবল ক্যারিয়ার প্রলম্বিত হবে না। কিন্তু ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যবধি ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে দাপটের সঙ্গে খেলে চলেছেন। তবে ইংল্যান্ডের এক টেলিভিশন টক-শো প্রোগ্রামে রোনালদো তার ভক্ত-সমর্থকদের চমকে দিয়েছেন অবসরের পরিকল্পনা নিয়ে নিজের বক্তব্য জানিয়ে।
সৌদি আরবে তিনি আল নাসরের হয়ে খেলছেন। ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মিলিয়ে সর্বকালের সর্বাধিক ৯৫২ গোল করা এই ফরোয়ার্ড গত মাসে জানিয়েছিলেন যে তিনি ১০০০ গোল করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। আর সেটি হওয়ার পরেই ফুটবল খেলা ছাড়বেন।
৫ বার মর্যাদার ব্যালন ডি’অর জেতা রোনালদোকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছে, কবে তিনি তার বুটজোড়া ঝুলিয়ে রাখবেন, তার প্রতি উত্তরে এক কথায় বলেছেন,‘অতি শীঘ্র’। এরপর রোনালদো আরও বলেন,‘আমার মনে হয় আমি প্রস্তুত হয়ে যাব। কিন্তু এটা খুবই কঠিন হবে। কিন্তু আমি আমার ২৫/২৬ কিংবা ২৭ বছর বয়সেই ভবিষ্যতের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। আমার মনে হয় চাপটা সয়ে নেওয়ার মতো সামর্থ্য আমি অর্জন করতে পারব। ফুটবলে একটি গোল করার যে উন্মাদনা কাজ করে সেটার সঙ্গে অবশ্য কোনোকিছুই তুলনীয় না।’
৪০ বছর বয়সেও বাইসাইকেল কিকের প্রবণতা দেখা যায় রোনালদোর মাঝে
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সমাপ্তি টানা কঠিন ব্যাপার হলেও রোনালদো বুঝতে পারছেন এক সময় থেমে যেতে হয়। তিনি বলেছেন,‘সবকিছুরই একটা শুরু আর শেষ আছে। আমি নিজেকে, পরিবারকে অনেক বেশি সময় দিতে পারব এবং বাচ্চাদের বড় করার জন্য সেটাই করতে যাচ্ছি।’
৩ বছর আগে পুরনো ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে আবার ছেড়ে আসেন। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুতে ইংলিশ এই ক্লাবটির জন্য মায়া হৃদয়ে সবসময়ই কাজ করে। তাই প্রতি মুহুর্তে ক্লাবটির খোঁজ-খবর রাখেন। গত মৌসুমে ১৫তম অবস্থানে থেকে লিগ শেষ করেছে ম্যান ইউ। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে তারা রেলিগেটেড হয়েছিল। তারপর গত মৌসুমের ফলটাই সবচেয়ে বাজে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।
পুরনো সেই মায়ার বন্ধন ভুলতে না পারা রোনালদো বলেন,‘আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি, কারণ বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাবগুলোর একটি তারা। আর সেই ক্লাবটি এখনও আমার হৃদয়ে গেঁথে আছে। তাদের এখন কোনো কাঠামোই নেই। আশা করছি ভবিষ্যতে এবং এখন থেকে কিছু পরিবর্তন আসবে, কারণ ক্লাবটির বিস্ময়কর সম্ভাবনা রয়েছে। তারা এখন ভালো পথে নেই এবং এটা শুধু কোচ কিংবা খেলোয়াড়দের ব্যাপার নয়- আমার মতে তিনি বেশ ভালোই করছেন। আপনি কি করবেন, অবিশ্বাস্য কিছু তো অসম্ভব তাই না।’ ম্যান ইউয়ের ম্যানেজার রুবেন অ্যামোরিমের ব্যাপারে বলেন রোনালদো।